Advertisement
সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ৪র্থ শ্রেনীর এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষন চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ব্যাক্তি উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মির্জা রুহুল আমিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রেজিব উদ্দীন (৫৭)।
এ নিয়ে মির্জাপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগড় এলাকায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়। সোমবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার সকাল ১১ টায় প্রথমে ওই শিক্ষার্থীর মা ও চাচীরা বিদ্যালয়ে এসে ওই শিক্ষককে লাঞ্চিত করে। পরে স্থানীয়রা শতাধিক লোকজন এসে বিদ্যালয়ের শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং বিচার দাবি করেন। পরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষটি মিমাংসা করে দেয়ার কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করে ওই শিক্ষকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
ওই শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনার দিন টিফিনের সময় ওই শিক্ষক আমাকে বাথরুমে ডেকে নিয়ে যান। তারপর তার পরনের কাপড় খোলার চেষ্টা করেন। এবং শিক্ষক রেজিব স্যারও প্যান্ট খুলে খারাপ আচরণ করেন। পরে অন্য শিক্ষার্থীদের আসার শব্দ পেয়ে আমাকে ছেড়ে দেয়। এরপর আমি দৌড়ে বাথরুম থেকে বের হয়ে এসে আলফা ম্যাডামকে বিস্তারিত বলে দেই।
বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আলফা বেগম বলেন, ঘটনাটি ঘটে ১১ তারিখ বুধবার। টিফিনের সময়। ওই দিন বিদ্যালয়ে আমরা দুইজন ম্যাডাম ছিলাম। একজন অসুস্থতার কথা বলে বাড়িতে চলে যান। পরে আমি আর এক শিক্ষক ছিলাম। প্রধান শিক্ষক মাসিক মিটিং এ উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়েছিলেন। মেয়েটি আমাকে ডেকে বলেন, রেজিব উদ্দীন স্যার আমাকে পঁচা কথা বলেছে। কি পঁচা কথা বলেছে তা কিন্তু বলেনি। শুধু বলেছে পঁচা কথা বলেছে আর কাঁন্না করছে। ছোট মানুষ সে কারণে আমরাও আর চাপাচাপি করিনি। বিষয়টি যাতে মেয়েটির মা জানতে না পারে সে বিষয় ম্যাডামকে বলতে নিষেধ করেন ওই শিক্ষার্থী। পরে বিষয়টি আমি মুঠোফোনে প্রধান শিক্ষককে অবগত করি।
ওই শিক্ষার্থীর মা বলেন, গতকাল প্রথমে ওর চাচী বিষয়টি শুনে এসে আমাকে বলেছে। তারপর আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। পরে মেয়েকে জিজ্ঞেস করলে সে সব খুলে বলে। তারপর ওর বাবাকে বলেছি। আমার মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করেছে আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক রেজিব উদ্দীন ঘটনাটি অস্বীকার করে বলেন, পুরো ঘটনাটি মিথ্যা। আমাকে একটি কুচক্রী মহল ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি তো নিজেই অসুস্থ মানুষ। আমি দীর্ঘদিন ধরে স্কুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দ্বায়িত্ব নিয়ে শিক্ষার্থীদের দিয়ে স্কুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করাই। ওই দিন আমি মেয়েদের বাথরুম পরিস্কার করার জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। পরে তাদেরকে ১০ টাকা দিয়েছি বলে জানান তিনি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য এবং বানোয়াট।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল আজম জানান, বিদ্যালয় মাঝে দুইদিন বন্ধ থাকার কারনে আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারিনি। আমি বিষয়টি তদন্ত করছিলাম। আজ ওই শিক্ষার্থীর মা ও চাচীরা সহ অনেকে বিদ্যালয়ে আসেন এবং ওই শিক্ষককে ধরার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়রা অনেক লোকজন জড়ো হন। নিরাপত্তার স্বার্থে ওই শিক্ষককে আমি তালাবন্ধ করে রাখি। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করার কথা বলে পরিস্থিতি ঠান্ডা করে ওই শিক্ষককে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া বলে জানান তিনি।