Advertisement
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
নাগেশ্বরীতে জমিজমা বিরোধে মোজাম্মেল কে মারধর, দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং এমআরআই পরীক্ষায় মেরুদন্ডে ফ্যাক্সার আঘাতে সয্যাশায়ী হয়ে মৃত্যুর অভিযোগ।
সরেজমি ও ভুক্তভোগী পরিচয় জানান, নাগেশ্বরী উপজেলার কালিগঞ্জ ইউনিয়নের বলদেরভিটা গ্রামের মৃত রহিম বকস (হাপা)'র ছেলে মোজাম্মেল হক ৪০বছর ধরে পৈতৃক ১৯শতক সম্পতি ভোগদখল করে আসছেন। উক্ত সম্পত্তি পার্শ্ববর্তী মৃত আসিমুদ্দিনের ছেলে দেলবর হোসেন চক্র দাবি করে আসছেন এবং গত এক বছর থেকে এ নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। দেলবর হোসেনের চাচাতো ভাই বয়েজ উদ্দিন গত ৩০ডিসেম্বর ২০২৪সালে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে মোজাম্মেল হকসহ ৮জনের বিরুদ্ধে ৪৬/২০২৫নং পিটিশন মূলে ১৪৪ধারা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ৪জানুয়ারী ২০২৫সালে মোজাম্মেল হকের পক্ষে রায় ঘোষণা করেন। এরই জের ধরে দেলবর হোসেন সঙ্গবদ্ধ চক্র পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গত ১৯মার্চ ২০২৫সালে আনুমানিক রাত ৮টায় মোজাম্মেল হক কে তাদের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় একা পেয়ে অভিযুক্ত সেকেন্দার আলীর পুত্র মোস্তফা মিয়া, দেলবর আলীর পুত্র শফিকুল ইসলাম, আব্দুল মজিদের পুত্র খইলুর রহমানসহ ১৭জন শিলা লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করে। এরপর মোজাম্মেল হক গুরুতর আহত হলে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং রোগীর অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেলে ও কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। মোজাম্মেল হক কে তার পরিবার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। মারধরের ঘটনায় মোজাম্মেল হকের ছেলে হযরত আলী গত ৬এপ্রিল ২০২৫সালে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে অভিযুক্ত নেতৃত্বকারী দেলবর আলী, মোস্তফা মিয়া, শফিকুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, মামুনসহ ১৭জন বিরুদ্ধে ৬২/২০১৫নং পিটিশন মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে অভিযুক্ত দেলবর হোসেন গংদের বেদম মারধরের আঘাতে মোজাম্মেল হক সয্যাশায়ী হলে গত ২৪জুন ২০২৫সালে রংপুর মেডিকেল কলেজে ও কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এমআরআই পরীক্ষায় তার মেরুদন্ডে ফ্যাক্সার আঘাতের রিপোর্ট পাওয়া যায় এবং তিনি সয্যাশায়ী হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২আগস্ট ২০২৫সালে নিজ বাড়িতে মারা যায় এবং অভিযুক্ত দেলবর আলী গংরা বিভিন্ন ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেখিয়ে মোজাম্মেল হক কে দাফন করান।
মোজাম্মেল হকের পুত্র হযরত আলী বলেন, জমিজমার বিরোধে দেলবর আলী চক্ররা আমার বাবা কে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন এরপর আমার বাবার মেরুদন্ডে ফ্যাক্সার আঘাতে সয্যাশায়ী হয়ে মৃত্যু হলে দেলবর গংরা জোরপূর্বক আমার বাবাকে দাফন করাতে বাধ্য করেন। এমনকি নাগেশ্বরী থানার এসআই ইদ্রিস আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার দায়ের করা মামলার চার্জসিট রিপোর্ট আদালতে ভিত্তিহীন পাঠান। আদালতে মামলার চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় আবুল হোসেন, মকবুল হোসেন ও আব্দুস সালাম ও বাচ্চু মিয়া বলেন, দেলবর হোসেন চক্র আমাদের সামনেই মোজাম্মেল হক কে একা পেয়ে বেদম মারধর করেন। এর কারণে মোজাম্মেল হক শয্যাশায়ী হয়ে মারা যান। বর্তমানে মোজাম্মেল হকের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছেন।
কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতের আইনজীবী হারুন অর রশিদ বলেন, মোজাম্মেল হকের ছেলে হযরত আলী গত ৬এপ্রিল ২০২৫সালে কুড়িগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে বিবাদী দেলবর আলী, মোস্তফা মিয়া, শফিকুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, মামুনসহ ১৭জন বিরুদ্ধে ৬২/২০১৫নং পিটিশন মামলা দায়ের করেন। নাগেশ্বরী থানা থেকে উক্ত মামলার অসত্য চার্জশিট বিজ্ঞ আদালতে দায়ের করা হয়। মামলার চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি করলে বিচারক তা মঞ্জুর করেন। মোজাম্মেল হক মারধরের ঘটনায় মারা যান। আমরা তার বিচার চেয়েছি। আশা করছি আদালতের মাধ্যমে বিচার পাবো।