Advertisement
সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ চলমান টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইনে রংপুর বিভাগের মধ্যে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা এখনো পর্যন্ত সবার চেয়ে এগিয়ে আছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দল।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সারাদেশে চলমান টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচীর অংশ হিসেবে পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে টিকাদান কর্মসূচী পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিনিধি দল। এবং আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ অফিসার ডা. হুমায়ুন কবিরকে ধন্যবাদও জানান তারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও রংপুর বিভাগের তথ্যসূত্র অনুযায়ী টাইফয়েড টিকাদানের জন্য যথাসময়ে অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে টিকাদান সহ রেজিষ্ট্রেশনের তুলনায় বেশি সংখ্যক শিশুকে টিকাদানের জন্য রংপুর বিভাগের মধ্যে আটোয়ারী উপজেলা এখনো পর্যন্ত সবার চেয়ে এগিয়ে থাকায় এই উপজেলাকে প্রথম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আটোয়ারী উপজেলাকে স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ অফিসার ডা. মোঃ হুমায়ুন কবির।
সারাদেশের ন্যায় পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচীর পরিদর্শনে আসেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দল। এসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) ইপিআই টিকাদান ভ্যাকসিন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর টিম লিডার ড. সুধীর যোসী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) আন্তর্জাতিক বিষয়ক পর্যবেক্ষক ড. সুভাজিৎ ভট্টাচার্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রংপুর বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর ড. জোবায়ের রহমান, ইউনিসেফের রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. বিকাশ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. মেশকাতুর রহমান, পঞ্চগড় জেলার সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার এসআইএমও ডা. সিফাত জাহান, জেলার ইপিআই সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডা. হাসিবুর রহমান শাহ ও আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ অফিসার ডা. মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শনকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বারআউলিয়ার কয়েকটি টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শন করে। তারা বারআউলিয়ার বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিনে শিশুদের টিকা দেওয়া হয়েছে কিনা তা যাচাই করেন। এসময় তারা প্রায় চল্লিশটি শিশুর সাথে কথা বলে এবং প্রত্যেককে টিকা দেওয়া হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হন। পরে আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও পরিদর্শন করেন। আটোয়ারীতে টাইফয়েড টিকাদানের সুষ্ঠ কর্মসূচী ও হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা প্রদান সহ বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকের ধন্যবাদ জ্ঞাপন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিনিধি দল।
উল্লেখ, ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)-এর সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার দেশব্যাপী টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছে গত ১২ অক্টোবর। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম দেশ হিসেবে এই ধরনের ক্যাম্পেইন চালু করলো। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো প্রায় ৫০ মিলিয়ন (পাঁচ কোটি) শিশুকে টাইফয়েড জ্বর থেকে রক্ষা করতে এক ডোজ জীবনরক্ষাকারী টিসিভি টিকা দেওয়া হচ্ছে৷ টাইফয়েডের টিকাদানের জন্য এই পর্যন্ত আটোয়ারী উপজেলা মোট ৩৭ হাজার নয়শো তেত্রিশ জন রেজিষ্ট্রেশন করেছিল। আর এই পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে ৩৮ হাজার তিনশো দুই জনকে। যা লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জন্মদিনের জটিলতার কারণে যেসব শিশুর রেজিষ্ট্রেশন সম্পন্ন হয়নি তারা নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিক বা হাসপাতালে এসে টিকা নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ডা. হুমায়ুন কবির।


