Advertisement
সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে লাউ খেত থেকে তনজিনা (৩৫) নামের এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ধামোর গ্রামে এক লাউ খেত থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে আটোয়ারী থানা পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের লাচ ব্যবসায়ী মৃত মজিবর রহমানের স্ত্রী। তনজিনার দুই ছেলে। বড় ছেলের নাম তৌহিদুল ইসলাম (১৩) এবং ছোট ছেলের নাম তামিম (৮)। তবে এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিলু নামের একজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, তনজিনার স্বামী চাল ব্যবসায়ী মজিবর রহমান গত ১ বছর পূর্বে মারা যায়। মারা যাওয়ার কয়েক মাস পর একই গ্রামের দিলু হোসেনের (দেলু) ছোট ছেলে মিনাল (২৭) তার সাথে সম্পর্কে জড়ায়। সম্পর্কের জেরে গত দুই মাস পূর্বে লুকিয়ে বিয়ে করেন মিনাল ও তনজিনা। বিয়ের পরেই মিনলা ও তনজিনা উপজেলার মির্জাপুর বাজারে এক ভাড়া বাসায় থাকা শুরু করেন। আর তাদের বিয়েটা বিচ্ছেদ করার জন্য মিনালের পরিবার থেকে তার ভীষণভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়। এদিকে তনজিনার বড় ও ছোট ছেলেকে মিনালের বড় ভাই মিজানুর রহমান বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল বলে জানা যায়।
তারই রেশ ধরে গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) তাদের বিয়ে বিচ্ছেদের জন্য তনজিনার বড় ছেলেকে দিয়ে ব্লাকমেইল করে মিনালের বড় ভাই মিজানুর। ছেলের কথা ভেবে বিয়ে বিচ্ছেদ করাতে বাধ্য হয় তনজিনা৷ পরে মিজানুর তনজিনার বড় ছেলে তৌহিদুলকে নিয়ে যায় পঞ্চগড় কোর্টে। আর মিনাল নিয়ে আসে তনজিনাকে। সেদিনই তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে চলে আসে। আর মিজানুর তনজিনার বড় ছেলেকে ৫০ টাকা দিয়ে মির্জাপুরের উত্তরা বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। তাকে সেখানে ছেড়ে দিয়ে মিনাল তনজিনাকে নিয়ে অন্যদিকে চলে যায় বলে নিশ্চিত করেন তার ছেলে তৌহিদুল ইসলাম।
ওইদিন রাতে অর্থ্যাৎ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তনজিনার বাসায় পুলিশ আসে৷ পুলিশের বরাতে স্থানীয়রা জানতে পারেন যে, তনজিনা নাকি জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল দিয়ে অভিযোগ করে বলেন, তাকে কোনো এক অন্ধকার জায়গায় আটকে রাখা হয়েছে। তাকে আটকে রেখে মিনাল চলে গেছে। এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সোমবার সকালে ওই এলাকার জাহিরুলের লাউ খেত কয়েকজন লাউ তুলতে আসে। সেই লাউ খেতটা আবার মিনালের বাড়ির উত্তর পাশেই। সেখানেই একজন মরদেহ পরে থাকতে দেখেন তাঁরা। কাছে গিয়ে তনজিনার পরিচয় সনাক্ত করা হয়। পরে বারঘাটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ও আটোয়ারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
বারঘাটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ এসআই মোঃ জাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা তথ্য পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিতি হই। পরে আটোয়ারী থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করে৷ কি কারণে মারা গেছে সেটা জানার জন্য মরদেহ পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। তবে এ ঘটনায় মিনালের বাবা দিলুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।


