lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫
Last Updated 2025-07-18T11:12:06Z
মানববন্ধন

আশ্রয়ণ প্রকল্পের পুকুর দখল নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান, পুকুর ফিরে পেতে মানববন্ধন

Advertisement


 


সজীব উদ্দীন, দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ের কালুপীর ভাঙ্গার পাড় আদর্শ গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পের খাস পুকুর দখলমুক্ত করতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। 


শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকাল ৩টায় আদর্শ গ্রামের পুকুরপাড়ে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে আশ্রয়ন প্রকল্পের অন্তত অর্ধ শতাধিক বাসিন্দা অংশ নেন।


মানববন্ধনে বক্তারা জানান, ২০১৭ সালে গড়ে উঠা এই আশ্রয়ন প্রকল্পে শুরুতে ৫৬টি পরিবার থাকলেও বর্তমানে বসবাসকারী পরিবার রয়েছে ৩০টি। স্বাবলম্বী হতে প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই গ্রামের ২৭ শতক আয়তনের খাস পুকুরটিতে মাছ চাষ করে আসছিলেন আশ্রয়নের বাসিন্দারা। তবে ২০২০ সালে স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ সমর্থক দুলাল, আবুল গং পুকুরটি দখলে নেয় বলে অভিযোগ করেন তারা।


বাসিন্দারা আরও জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চলতি বছরের ৫ আগস্টের পর তারা পুনরায় পুকুরটি নিজেদের দখলে নেন। এরপর থেকেই তারা দখলদারদের হুমকি-ধামকির মধ্যে রয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।


আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা তারেক হোসেন বলেন, দুলাল হোসেন এই পুকুর অবৈধ ভাবে দখল করতে চাচ্ছে। অথচ এই পুকুর দখলে নিতে চেয়ারম্যানের রায় মেনে নেওয়ার পর ডিসি অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। পুকুরের পানি ব্যবহার করতেও আমাদের বাধা দেওয়া হয়।


বাসিন্দাদের অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান আপোষ করে দেওয়ার পর দুলালকে ৬ মাস সময় দেন তার বাঁশ কেটে নেওয়ার জন্য। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি বাঁশ কেটে নেওয়ার পর আদর্শ গ্রামের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে বাঁশ কেটে নেওয়ার অভিযোগ দেন ডিসি অফিসে। সেই অভিযোগের শুনানি শেষে ইউএনও একতরফা ভাবে গত বুধবাত দুলালের পক্ষে রায় দেন।


ময়না বেগম নামে এক নারী বলেন, পুকুরে নামার জন্য আমার ছেলেকে মারধর করা হয়েছিল। এই পুকুরে আমাদের হক আছে। আমাদের হক বুঝিয়ে না দিয়ে যাদের জমি আছে, খাস জমি দখলে আছে তাদেরকে পুকুর বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে।


এর আগে গত সেপ্টেম্বরে আদর্শ গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম উভয় পক্ষের মধ্যে শুনানি শেষে এবং স্থানীয় আমিন দ্বারা পরিমাপ শেষে আদর্শ গ্রামের বাসিন্দাদের পক্ষে পুকুর (দাগ নং ৩৩০২) ভোগদখলের রায় দেন।


এই বিষয়ে শালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম বলেন, দুলালের যেটুকু জমি প্রয়োজন সেটুকু পুরোপুরি তার দখলে। তার পুকুর দাবি করাটা অযৌক্তিক। তাকে বাঁশ কেটে নিতে বলার পর বাঁশও কেটে নিয়েছেন। বেশ কয়েক মাস ধরে বিষয়টি চুপচাপ থাকলেও নতুন করে শুনছি দুলাল ইউএনও অফিসে অভিযোগ করেছেন।


তবে অভিযোগ অস্বীকার করে দুলাল হোসেন বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্প শুরুর সময় তৎকালীন ইউএনও আমাদের মালিকানাধীন ১৩ শতক জমি নেন। বিনিময়ে সে সময় এই পুকুরটিতে আমাদের মাছ চাষের মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়। সম্প্রতি ইউএনও উভয় পক্ষকে নিয়ে শুনানির পর পুকুর আমাদের দখলে রাখার রায় দেন।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলো তৈরী করার সময় ঐ পুকুরটি খনন করা হয়েছিল। সে সময় দুলাল হোসেনের ১৩ শতক নিজস্ব জমি আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর তৈরী করা হয়েছিল, বিনিময়ে পুকুরটি তাকে দেওয়া হয়েছিল। শর্ত অনুযায়ী ঐ পুকুরটি দুলাল হোসেনের। দুলাল তার দেওয়া ১৩ শতক জমি আশ্রয়ন প্রকল্পে লিখে দিবেন, এমনটাই সিদ্ধান্ত ছিল এবং সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।