Advertisement
ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ডাকাতি ঘটনায় জড়িত সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে দুইটি পাইপগান, ছয় রাউন্ড কার্তুজ, একটি হাইড্রোলিক কাটার, একটি তালা ভাঙার শাবল, ডাকাতির সময় ব্যবহৃত মুখোশ, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার, একটি মোটরসাইকেল, লুণ্ঠিত নগদ ৮ লক্ষ ৬ হাজার ৯৮২ টাকা এবং ৪ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপ্স) নোবেল চাকমা। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন, মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিনহাজ উদ্দিন প্রমুখ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরস্থ ঈদগাহ রোড আবাসিক এলাকায় জনৈক এমদাদ মোহাম্মদ সিরাজের বাড়িতে চলতি বছরের ৩ ফেব্রæয়ারি রাত আড়াইটার দিকে কতিপয় দুস্কৃতিকারী বসতঘরের গেইটের তালা কেটে ও দরজার সিটকারী ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে ২৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার এবং নগদ ৬ লক্ষ ৯ হাজার টাকা লুঠ করে নিয়া যায়। এ ঘটনায় ৬ ফেব্রæয়ারি মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেনের দিক নির্দেশনায় সদর মডেল থানা পুলিশের একটি বিশেষ টিম তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানা এলাকা এবং সিলেট জেলার ওসমানীনগর এবং দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কামরাখাইর গ্রামের ময়না মিয়ার ছেলে মো. রায়হান মিয়া (২৫), সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলার মৃত ইদ্রিস মিয়ার ছেলে আক্কুল মিয়া ওরফে আকুল (৩৪), হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার পারকুল গ্রামের সঞ্জব উল্লাহর ছেলে মো. আফাজ মিয়াকে (৪৯) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে রায়হান মিয়ার বসতঘর হতে ছয় রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে জগন্নাথপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে আসামিদের আদালতের আদেশে পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মতে সোমবার (২৮ এপ্রিল) সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের সহযোগী ওই উপজেলার কামড়াখাইর গ্রামের মৃত সুজাত মিয়ার ছেলে মো. মনর মিয়াকে (৫৫) গ্রেপ্তার এবং তার বাড়ির গ্যারেজ হতে দুইটি দেশীয় তৈরি পাইপগান, হাইড্রোলিক কাটার, তলা কাটার সাবল, মুখোশ উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মতে সিলেট কোতোয়ালী থানার সোবহানীঘাট এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত অশোক কুমার দে (৪০) এবং আন্তঃজেলা ডাকাত দলের প্রধান সিলেট জেলার ওসমানীনগর থানার মোবারকপুর গ্রামের মৃত নুর মিয়ার ছেলে তোফায়েল আহমদ তোফাকে (৩৬) শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সিলেট শহরস্থ লালদিঘীরপাড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মার্কেটের জনৈক স্বপন কর্মকারের জুয়েলার্সে অভিযান চালিয়ে লুন্ঠিত স্বর্ণের ক্রেতা দিনেশ কর্মকারকে (৬৫) গ্রেপ্তার করে তার হেফাজত থেকে লুন্ঠিত ৪ ভরি ৭ আনা স্বর্ণালংকার এবং স্বর্ণবিক্রির নগদ ৮ লক্ষ ৬ হাজার ৯৮২ টাকা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত ও তাদের সহযোগিরা জানায়, তারা পরস্পর যোগসাজসে শেরপুর এলাকার এমদাদ মোহাম্মদ সিরাজের বাড়ি ছাড়াও গত ২১ এপ্রিল সদর মডেল থানার খলিলপুর ইউনিয়নের বাগারাই গ্রামে প্রবাসী আব্দুর রহিমের বসতঘরের কেচি গেইটের তালা কেটে পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্নালংকার এবং নগদ ২ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫০০ লুঠ করে নিয়ে যায়। এসব ঘটনায় বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপ্স) নোবেল চাকমা।