Advertisement
সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থানরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশের বর্বোরচিত হামলা ও ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়াসহ তিন দাবিতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে শিক্ষকদের বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আটোয়ারী উপজেলার এমপিও ভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) ব্যানারে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে এগারোটায় আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে শুরু করে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ র্যালীটি শেষ হয়।
এসময় এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের শিক্ষকরা বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষকদের ওপর যে হামলা করা হয়েছে, তা ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এই সরকারের কাছ থেকে এটি আশা করিনি। আমাদের পাঁচ সহযোদ্ধা শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের তিনটি দাবির বিষয় প্রজ্ঞাপন জারি করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে এবং আমরা ক্লাসে ফিরবনা৷ প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরাও রাস্তায় নামবো৷ শিক্ষকরা বলেন, এটা আমাদের ন্যায্য দাবি৷ আমরা দেশ গড়ার কারিগর। অথচ আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত করে রাখা হয়েছে। আমাদের যা বেতন তা দিয়ে পুরো মাস চলেনা। এখনকার সময়ে বাংলাদেশের কোথাও মাত্র এক হাজার টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়না। অথচ সরকারি কর্মকর্তাদের বেতনও বেশি আবার বাড়ি ভাড়াও দেওয়া হচ্ছে চল্লিশ শতাংশ। আমাদের চিকিৎসাভাতা দেওয়া হচ্ছে মাত্র পাঁচশো টাকা। এটা নিয়ে আমাদের ২ দিনের ঔষধও হয়না। তাই আমাদের চিকিৎসাভাতা পনেরোশ করতে হবে। এছাড়াও আমাদের বিদ্যালয়ের ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বেতনও কম৷ তাদের উৎসব ভাতা পচাত্তর শতাংশ করতে হবে। তাঁরা বলেন, সরকারের ঘোষিত বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির হার ‘অপর্যাপ্ত ও অবাস্তব’। তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি এবং সর্বজনীন বদলি নীতি বাস্তবায়নের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, সারা দেশে এমপিভুক্ত শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে। আর কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। গত রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় শিক্ষকদের পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড, জলকামান ও লাঠিচার্জ করে। এরপর বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়েন তারা। এসময় অনেক শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছেন। কয়েকজন শিক্ষাককে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরে সংগঠনের নেতাদের আহ্বানে শিক্ষকরা সরে গিয়ে শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখানে থেকেই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।এরই ধারাবাহিকতায় সারা দেশে শিক্ষকদের আন্দোলন ও কর্ম বিরতি পালন করেছেন।
এসময় আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস, উপজেলা কালব এর সভাপতি জিল্লুর হোসেন সরকার, সেক্রেটারি আতাউর রহমান, তোড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, শিক্ষক জরিফ হোসেন চৌধুরী, হাফিজুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, রেজাউল করিম সহ প্রায় এক হাজার খানেক শিক্ষক ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পক্ষে উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহিদুল ইসলাম ও উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ রুস্তম পাটোয়ারী স্মারকলিপি প্রদান গ্রহণ করেন।