lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫
Last Updated 2025-10-23T14:09:16Z
জাতীয়

আটোয়ারীতে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে অবাধে চলছে নদী থেকে বালু উত্তোলন

Advertisement


 

সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে নাগর নদী থেকে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে নদী-তীরবর্তী আবাদি জমি ভাঙনের সম্মুখিন হয়ে পড়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। প্রশাসনের লোকজন দেখেও না দেখার ভান করে থাকায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 


বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে উপজেলা ধামোর ইউনিয়নের ধামোরহাট  ঈদগাঁহ মাঠের পশ্চিমে নাগর নদীতে গিয়ে দেখা যায়, অবস্থা অনেকটা মগের মুল্লুকের মতো। নিজের ইচ্ছা মতো একটি চক্র বালু উত্তোলন করছে। কিন্তু কারও যেন কিছু বলার নেই। এই বালু উত্তোলনের মাধ্যমে একদল মানুষ অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা পকেটে ভরছে। অন্যদিকে সরকারও লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। 


এভাবে যত্রতত্রভাবে বালু উত্তোলন করলে নদীর গতি পথ পরিবর্তিত হয় এবং নদীর পাড় ভেঙে যায়। অর্থাৎ নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে প্রকৃতিরও ক্ষতি হচ্ছে। ওই নাগর নদীর পাশেই রয়েছে বড় পাকা রাস্তা। সেই রাস্তার পাড় থেকে মাত্র ১০ ফিট দূরত্বে নাগর নদী বয়ে গেছে৷ এভাবে বালু উত্তোলনের ফলে আগামী বর্ষায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে পাকা রাস্তাও ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না বালু ও মাটি উত্তোলন। এ বালু দিয়ে বাড়ি, রাস্তাসহ বিভিন্ন ভরাট কাজের ব্যবসা করা হচ্ছে। নাগর নদীতে গভীর করে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে তার খেসারত দিতে হয় নদী ধারের জমির মালিকদের। ক্ষতি হয় ফসলি জমির। অনেক গাছপালা যায় নদীগর্ভে। তাই এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অতি শিগগিরই বন্ধ করার দাবি স্থানীয়দের।


স্থানীয়রা জানান, গুটিকয়েক লোকের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এভাবে সর্বনাশ মেনে নেওয়া যায় না। এ ক্ষতি রোধ করতে হবে। তাদের দাবি, অবিলম্বে এই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনের কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থেকে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে কি না, সেটা তদন্ত করে বের করতে হবে। 


জানা যায়, স্থানীয় মোঃ কাবিল, মন্তাজুল এবং আব্দুল হামিদ অবাধে বালু তুলে মহেন্দ্র গাড়ি করে বালু বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন। বিক্রির পাশাপাশি নিজদের বাড়িতেও বালু দিয়ে ঘর ভরেছেন। গত দু'সপ্তাহ থেকে তিনটি মহেন্দ্র গাড়িতে করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় বালু বিক্রি করে কামিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। আর বালু বিক্রির জন্য তারা সরকারের কাছ থেকে কোনো অনুমতিও নেননি। বালু ব্যবসায়ীর এই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত নদী থেকে প্রতিদিন বালু তুলছে। এসব বালু স্টক করে বিক্রি করছে বিভিন্ন এলাকায়। এভাবে বালু তোলা অব্যাহত থাকলে ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 


এনিয়ে বালু ব্যবসায়ী মোঃ কাবিলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরা নদীতে ধান চাষ করি৷ তাই নদীর যে অংশে বালু পড়ে উচু হয়ে গেছে সেগুলো আমরা বাসায় নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বালু বিক্রির কথা অস্বীকার করেন তিনি। তাহলে গত দু'সপ্তাহের বেশি দিন ধরে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে কেন এর কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। 


ধামোর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের মোঃ দুলালের কথা বললে তিনি জানান, আমার জানা মতে আমাদের এলাকায় কোনো বালু উত্তোলন করা হয়না। আর কেউ বালু উত্তোলন করছে কিনা তাও সঠিকভাবে আমার জানা নাই। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখব কে বা কাহারা বালু উত্তোলন করছে।


এবিষয়ে জানতে আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।