Advertisement
নাটোর জেলা প্রতিনিধিঃ
নাটোরের লালপুর ও বাগাতিপাড়া উপজেলার ৬ কিলোমিটার খালের পাড়ে সামাজিক বনায়ন প্রকল্প অনিশ্চয়তায় পড়েছে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস (চিনিকল) লিমিটেডের আপত্তিতে। বন বিভাগ ও রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে কার্যক্রমটি আটকে আছে। সময়মতো গাছ না লাগাতে পারলে পরিবেশ ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) আওতায় নরেন্দ্রপুর, পরিক্ষামূলক ও কৃষ্ণা কৃষি খামারে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পৃথক খাল সম্প্রতি খনন করা হয়। খালের দুই পাশে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ। প্রকল্প অনুমোদিতও হয়েছে। কিন্তু নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল কর্তৃপক্ষের আপত্তিতে বাস্তবায়ন শুরুই করা যায়নি।
উপজেলা বন কর্মকর্তা এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, প্রকল্প অনুমোদন হয়ে গেছে। কিন্তু মিলের সংলগ্ন এলাকায় গাছ লাগাতে অনুমতি দিচ্ছে না তারা। মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হলেও কোনো অগ্রগতি নেই। বর্ষাকাল চলে গেলে আর গাছ লাগানো সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে, নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদ হোসেন ভূইয়া বলেন, বন বিভাগ আমাদের সঙ্গে কোনো চুক্তি ছাড়াই সামাজিক বনায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। মিলের জমিতে গাছ লাগাতে হলে অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন, যা তারা নেয়নি। পরবর্তীতে ইউএনও কার্যালয়ে আলোচনায় বন বিভাগকে চিঠি দিয়ে অনুমতি চাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা সেই চিঠি দেয়নি।
এনিয়ে পরিবেশবাদীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পরিবেশ আন্দোলন বাংলাদেশের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, লালপুর এমনিতেই দেশের সবচেয়ে উষ্ণ উপজেলা। মিল কর্তৃপক্ষের তো উচিত ছিল নিজেরাই গাছ লাগানো। কিন্তু তারা বন বিভাগের উদ্যোগেও বাধা দিচ্ছে, এটা খুবই দুঃখজনক।
তিনি আরও বলেন, মিলের ধোঁয়া ও তরল বর্জ্যে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এখন আবার বনায়ন আটকে দিয়ে তারা পরিবেশের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিচ্ছে।
নাটোর জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। দ্রুত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।