Advertisement
সালাম মুর্শেদী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা ধামোর ইউনিয়নের সোনাপাতিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম গাজী'র বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় উদাসীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতা সহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর প্রতিষ্ঠানে না এসে স্বাক্ষর করা, সবার আগে স্কুলে এসে স্বাক্ষর করে চলে যাওয়া, স্কুলে এসে সময় কাটানো এবং স্কুল পরিচালনায় উদাসীনতা সহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
গোপন সূত্রে জানা যায়, সকালে এসে স্বাক্ষর করেই সারাদিনের জন্য কোথায় যেন চলে যান, আর ফেরেন না। সপ্তাহে ৩/৪ দিন তিনি এমনটা করেন। স্কুলে পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ার হাজারো অভিযোগ। স্কুলটাকে প্রায় দেউলিয়া বানিয়েছেন। যতটুকু ভালো আছে তা শুধু সহকারী শিক্ষকেদর জন্য। এমন অভ্যাস সহ নানা অনিয়মের জন্য ইতোপূর্বে স্থানীয়দের হাতে মা'র-ও খেয়েছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে চলছে বিভাগীয় মামলা।
সূত্রে আরো জানা যায়, ইতোপূর্বে সপ্তাহে ২ দিন স্কুল না আসলে ৩য় দিন এসে স্বাক্ষর করে দিতেন তিনি। কিন্তু স্থানীয়দের চাপে ও প্রশাসনিক মামলা চলমান থাকায় এমনটা আর করেন না। কিন্তু সকালে সবার আগে স্কুলে এসে স্বাক্ষর করে চলে যাওয়ার অভিযোগ অনেক। কোথায় যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন কোনো সহকর্মীকেও তা বলে জান না তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় তিনি স্কুলে নাই। এবিষয়ে তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে জানান, 'তিনি জরুরি কাজে গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে যাচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনে রয়েছেন বলে তিনি জানান'।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, 'স্যার সকালে এসে স্বাক্ষর করে তারাহুরো করে কাউকে কিছু না বলে চলে গেলেন। তিনি প্রায়ই সময়ে এমনটা করেন। মাঝেমধ্যে স্কুলে থাকলেও সারাদিন অফিসে বসে থাকেন। শুধু কাগজপত্রে স্বাক্ষর ছাড়া কোনো অফিসিয়াল কাজকর্মও করেন না। সব কাজ আমরাই করে দিই। ইতোপূর্বে স্কুলে এসেও ২/৩ দিনের স্বাক্ষর একদিনে করে দিতেন কিন্তু এখন তা করেনা৷ আর স্কুলে আসলেও পর্যাপ্ত সময়ও দেন না'।
এদিকে স্কুলে এসে স্বাক্ষর করে যখন তখন চলে যাওয়ার বিষয়ে অবগত নয় আটোয়ারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। বৃহস্পতিবার স্কুলে এসে স্বাক্ষর করে চলে যাওয়ার বিষয়েও ওই প্রধান শিক্ষক অফিসের কাউকে জানাননি।
এবিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল মানিক চৌধুরী জানান, 'ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে অনেক অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও হয়েছিল। সেই তদন্ত রিপোর্টও আমরা ইতোমধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছি। আজকে স্কুলে এসে স্বাক্ষর করে কাউকে কিছু না জানিয়ে চলে যাওয়ার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখব। যদি সত্যতা মিলে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা অফিসিয়ালি ভাবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব'।