lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫
Last Updated 2025-07-11T09:24:36Z
ব্রেকিং নিউজ

পলাশবাড়ীতে ট্রমা সেন্টার বা বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপনের দাবী এলাকাবাসীর

Advertisement


 


আশরাফুল ইসলাম, গাইবান্ধা ::

গাইবান্ধা জেলা তথা উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বারখ্যাত চির অবহেলিত অনুন্নত এক জনপদের নাম পলাশবাড়ী উপজেলা। মহাসড়কের প্রায় ১৫ কি.মি. অংশ এ উপজেলার অভ্যন্তর। মহাসড়কের এ অংশে প্রতিনিয়ত ঘটে থাকে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা।এতে হতাহত হয় যাত্রী,পরচারি ও শ্রমজীবি মানুষসহ সর্বসাধারণ। 



দুর্ঘটনা কবলিত অসহায় মানুষগুলো তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসা না পাওয়ায় নিমিষেই হারাতে হয় প্রান-নয়তোবা পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়। 




এ উপজেলার একটি মাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেখানে বছরের অধিকাংশ সময় চিকিৎসক ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট,কর্মচারী সংকট লেগেই থাকে।অপরিস্কার -অপরিচ্ছন্ন ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি নিজেই রোগাক্রান্ত। হাসপাতালের নানাবিধ সংকটের মুখে দুর্ঘটনা কবলিতদের উপজেলা থেকে অর্ধশত কি.মি. দুরে রংপুর বা বগুড়ায় স্থানান্তর করা হয়।হাসপাতাল হতে রংপুর বা বগুড়া পৌছতে এক হতে দেড় ঘন্টা সময় লেগে যায়। ততক্ষণে আহতদের চরম অবনতি ঘটে।কেউ মৃত্যুর কোলে কেউবা চিকিৎসা অভাবে পঙ্গুত্ব বরণ করে থাকেন। এভাবেই চলছে যুগের পর যুগ চিকিৎসা ব্যবস্থা। অবহেলিত এ জনপদের মানুষ আজও তাদের মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্য সেবা হতে চরম বঞ্চিত হচ্ছে। 




উপজেলার সর্বসাধারণের দাবী সড়ক মহাসড়কে দুর্ঘটনায় কবলিত মানুষদের উন্নত স্বাস্থ্য সেবা দিতে এ উপজেলায় একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল অথবা ট্রমা সেন্টার স্থাপনের দাবী দীর্ঘদিনের। বিগত সময় স্থানীয় ভাবে দায়সাড়া জনপ্রতিনিধি কিংবা রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিরা এটি কর্ণপাত করেনি। জনগণের দাবী তারা বোঝার চেষ্টাও করেনি। সড়ক দুর্ঘটনা গুলোতে মানুষের নির্মম মৃত্যু ঘটলেও তাদের পাষাণ চোখের পর্দা সরেনি। 



স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও তরুণ সমাজ সেবক পলাশবাড়ী সচেতন নাগরিক সমাজের নেতা মিজানুর রহমান নিক্সন দাবী করেন, এ উপজেলার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবী সঠিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা। আজও বাস্তবায়িত হয়নি। এলাকাবাসী হতভম্ব। দুর্ঘটনায় যারা হতাহত হন তাদের বেশির ভাগই চিকিৎসা অভাবে প্রাণ হারান অথবা সারাজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেন।দুর্ঘটনা কবলিত মানুষকে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে আমাদের দাবী দ্রুত সময়ের মধ্যে এ উপজেলায় মহাসড়কের পাশে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল অথবা ট্রমা সেন্টার স্থাপন করা হোক। 



সমাজকর্মী ও সাংবাদিক মোশফেকুর রহমান মিল্টন বলেন,সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা লেগেই আছে।বড় বড় মিডিয়া নিহত ও হতাহতের খবর প্রকাশ করে। কিন্তু দুংখজনক হলেও সত্য দুর্ঘটনায় কবলিত মানুষ গুলো চিকিৎসা সেবা পায় কি-না? সেটি কেউই প্রচার বা প্রকাশ করে না। 



স্বাস্থ্যকর্মী নাঈম আকন্দ দাবী করেন, উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণ প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। অথচ প্রতি বছর এ উপজেলার দুর্ঘটনায় চিকিৎসা অভাবে এলাকার অসংখ্য মানুষ প্রান হারায় অথবা পঙ্গু হয়ে যায়। 



প্রেসক্লাব পলাশবাড়ীর সভাপতি সাংবাদিক মনজুর কাদির মকুল দাবী করেন এ উপজেলার মহাসড়ক অংশে দুর্ঘটনার শিকার মানুষগুলো বরাবরই চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হয়ে প্রান হারাচ্ছেন অহরহ।পঙ্গু হয়ে যান অসংখ্য মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে কতশত পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। তবুও কারো নিকট জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি অনুধাবন করার ফুরসত হয়নি।এলাকার মানুষ বারংবার সুচিকিৎসা হতে বঞ্চিত হয়েই আসছে।



পলাশবাড়ী রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি সাংবাদিক আশরাফুল ইসলাম জেলা ও উপজেলার সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সভা সমাবেশে ট্রমা সেন্টার অথবা উন্নত মানের হাসপাতাল নির্মাণের দাবী জানিয়ে আসছেন। রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যরা অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিরোধে ভূমিকা পালনের পাশাপাশি  এলাকার সমস্যা ও সম্ভবনা গুলো তুলে ধরছে। 



এবিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল আলম জানান,দুর্ঘটনা প্রবণ এ মহাসড়কের অংশে উন্নতমানের একটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র অথবা ট্রমা সেন্টার নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।




উল্লেখ্য, পলাশবাড়ী উপজেলার মহাসড়কের অংশ একটি উন্নত মানের হাসপাতাল অথবা ট্রমা সেন্টার স্থাপনে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও প্রধান উপদেষ্টার প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার সর্বস্তরের সচেতন মানুষ।