Advertisement
ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংক থেকে মোবাইল তুলতে গিয়ে আপর দুই ভাইসহ ৪ জন চা-শ্রমিক সন্তান বিষক্রিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছে। গুরুতর আহত হয়েছে অপর ১ তরুণ। বুধবার গভীর রাতে উপজেলার ৭ নম্বর রাজঘাট ইউনিয়নের ফিনলে টি কোম্পানির মালিকানাধীন হরিণছড়া চা বাগানে এ ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতরা হলেন আপন দুই ভাই রানা নায়েক (১৭), শ্রাবণ নায়েক (১৯), কৃষ্ণ রবিদাস (২০) ও নিপেন ফুলমালি (২৭)। গুরুতর আহত রবি বুনার্জীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রণয় কান্তি দাশ।
পরিবারের উদ্বৃতি দিয়ে ৭ নম্বর রাজঘাট ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার অজয় ভৌমিক জানান, বুধবার দিবাগত গভীর রাতে রানা নায়েকের মোবাইল ফোন হাত থেকে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকিতে পড়ে যায়। সে মোবাইল ফোনটি তুলতে সেপটিক ট্যাংকের নিচে নামেন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিষাক্ত গ্যাসে অবচেতন হয়ে তিনি নিচে পড়ে যান এবং আর উঠতে পারেননি। সাথে সাথেই তার বড় ভাই শ্রাবণ নায়েক ভাইকে বঁাচাতে ওই ট্যাংকের নামলে তিনিও আর উঠতে পারেননি। তারপর দুই ভাইকে উদ্ধারে তাদের প্রতিবেশি কৃষ্ণ রবিদাস ও নিপেন ফুলমালিও ট্যাংকে নেমে বিষাক্ত গ্যাসে অবচেতন হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় একই বাগানের রবি বুনার্জী (২০) গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনার সাথে সাথে স্থানীয়রা সেপটিক ট্যাংকি থেকে ৫ তরুণকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রানা নায়েক, শ্রাবণ নায়েক, কৃষ্ণ রবিদাস ও নিপেন ফুলমালিকে মৃত ঘোষণা করেন এবং গুরুতর আহত রবি বুনার্জীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সব্যসাচী পাল তমাল বলেন, ‘গভীর রাতে পঁাচ জনকে আমাদের হাসপাতালে আনা হলে দেখা যায় এদের মধ্যে চার জন মৃত। একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট রেফার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. প্রণয় কান্তি দাশ বলেন, ‘বুধবার গভীর রাতে ৪ জনকে মৃত ও ১ জনতে আহতাবস্থায় স্থানীয়রা আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাদের কাছে শুনেছি ওদের একজনের মোবাইল সেপটিক ট্যাংকে পড়ে গিয়েছিল। এরপর ওই মোবাইল উদ্ধার করতে গিয়ে একে একে ৪ জন ট্যাংকে নামলে বিষক্রিয়ায় তারা মৃত্যুবরণ করেন।’
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হরিণছড়া চা বাগানে সেপটিক ট্যাংকে পড়ে ৪ জন তরুণ প্রাণ হারিয়েছেন বলে শুনেছি। পুলিশ হরিণছড়া চা বাগানের গিয়ে ওই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি তদন্তনাধীন।’