Advertisement
রবীন্দ্রনাথ সরকার, রংপুর(গঙ্গাচড়া) প্রতিনিধিঃ
রংপুর জেলার গংগাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কলাগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সিগ্ঙিমারী ঘাট (গান্নারপাড়) মহিপুর তিস্তা সেতু যাওয়ার দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি পাঁচ গ্রামের মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
লাভলু মিয়ার বাড়ি থেকে শুরু করে ডেইরী খামার ব্যবসায়ী মো: মেহেদী হাসান (মামুন) বাড়ি এবং কলাগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ওই কাঁচা রাস্তার পুরো অংশজুড়েই খানা-খন্দ আর কাদা-পানিতে ভরপুর। বছরের পর বছর ধরে সংশ্লিষ্ট সকলের নাকের ডগায় চরম অবহেলায় উন্নয়ন বঞ্চিত ওই কাঁচা রাস্তাটি এলাকাবাসীর জন্য এখন অভিশাপের কারণ।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন আশপাশের ৫টি গ্রামের স্কুল,মাদ্রাসা, ঈদগাহ ময়দান, কলেজগামী শিক্ষার্থী, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা নিয়মিত এই কাঁচা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তায় চলাচলে কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পুরো রাস্তাটি কাদায় পরিণত হয়ে পড়ে যার ফলে পায়ে হাঁটারও কোনো সুযোগ থাকে না।
এখানে কয়েকটি বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমন মেহেদী ডেইরি ফার্ম, রিফাত রাব্বি রাইচ মেইল,শামীম রাইচ মেইলসহ আর বিভিন্ন ব্যাবসায়ী আছে বর্ষাকালে এদের ব্যাবসায়ী কাজে যাতায়াতের অনেক ভোগান্তি হয়
খানাটারী গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মোসলেম উদ্দিন লাল বলেন, “আমরা এই রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন কৃষিপণ্য বিক্রি করতে নিয়ে যাই। কিন্তু বর্ষায় ট্রলি, রিক্সা, ব্যাটারিচালিত অটোসহ কোনো প্রকার যানবাহনই এই রাস্তায় চলতে পারে না। ফলে আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য সহজে বাজারজাত করতে পারছি না। এ কারণে আমাদের কৃষি পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে লোকসান গুণতে হচ্ছে।
স্থানীয় কলাগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ইসমত আরা বেগম জানায়, “বর্ষায় হেঁটে স্কুলে যাওয়া যায় না। কাঁদা আর পানি দেখে ভয় হয়। অনেক দিন ক্লাসও মিস হয়ে যায়। অনেক সময় বাচ্চারা বিদ্যালয়ে আসার সময় হোচট খেয়ে বিড়ম্বনার স্বীকার হয়ে পড়ে।” গৃহবধূ ময়না বেগম বলেন, কোনো রোগীকে চিকিৎসার জন্য উপজেলা সদরে নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। রাস্তার দুরাবস্থার কারণে গাড়ি চলাচল করতে পারে না তাই রোগীকে কাঁধে করে নিতে হয় কখনও কখনও। বিশেষ করে রাত হলে সমস্যাটা আরও বেড়ে যায়।”
"এদিকে গ্রামের শাকির হোসেন (আশু) মিয়া বলেন, রাস্তাটি হলে রংপুর বুড়িরহাট থেকে সিঙ্গিমারি ঘাট এবং গান্নারপাড় এলাকাবাসির অন্তত ৫ কিলোমিটার পথ কমে যাবে। এতে দূরদূরান্তের পথচারীদের চলাচলে যেমন সুবিধা হবে স্থানীয় জনগণের চলাচলে বিশেষ সুবিধা পাবে।"
উল্লেখ্য, এই সড়ক পথটি দিয়ে খানাটারী পশ্চিম পাড়া, পূর্বপাড়া, উত্তরপাড়া, মহিষবাতান, গান্নারপাড় সহ আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা নিয়মিত চলাচল করেন। এলাকাটি কৃষি প্রধান হওয়ায় এখানকার কৃষকরা বিভিন্ন মৌসুমি সবজি উৎপাদন করে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকেন। কিন্তু রাস্তার করুণ অবস্থার কারণে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে উৎপাদনে ও বাজারজাত করণে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাটি কাঁচা থাকলেও কোনো জনপ্রতিনিধি বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-নজরে আসেনি।
বহুবার আবেদন নিবেদন করে এই রাস্তাটি উন্নয়নের দাবি জানানো হলেও বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সচেতন মহল সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “এই রাস্তাটি পাকা করা হলে খানাটারী ৫ গ্রামের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে। পাল্টে যাবে দৃশ্যপট, কমবে জনদুর্ভোগ বাড়বে আয় উন্নতি।