lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫
Last Updated 2025-06-27T06:40:52Z
ব্রেকিং নিউজ

আটোয়ারীতে রাস্তার সিসি ঢালাইয়ে অনিয়ম, সাংবাদিককে হুমকি

Advertisement


 

সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার প্রকল্প, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) এবং কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, অধিকাংশ এলাকায় এসব প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান নয় এবং যেখানে আবার কাজ শুরু হয়েছে, সেখানেও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা পানিতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা।



এরমধ্যে উপজেলার ধামোর ইউনিয়নে বর্তমানে ৪টি, কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের কার্যক্রমের বরাদ্দ রয়েছে। প্রকল্প গুলো হলো: গিরাগাও গ্রামে ৪ লাখ টাকার ৬৬০ ফিটের ইটের সলিং, মালগোবা গ্রামে ৫ লাখ ৫৩ হাজার টাকার ৩০০ ফিটের সিসি ঢালাই, রাজাগাও গ্রামের নজরুলের বাড়ি থেকে নাগর নদী পর্যন্ত ৪ লাখ টাকার রাস্তা সংস্কার এবং জুগিকাটা গ্রাম থেকে মিশন পর্যন্ত ৩ লাখ টাকার রাস্তা সংস্কারের কাজ। 



এই ৪ টি প্রকল্পের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মালগোবা গ্রামে ৫ লাখ ৫৩ হাজার টাকার ৩০০ ফিটের সিসি ঢালাইয়ের কাজ শুরু করা হয়। উক্ত প্রকল্পগুলোর সভাপতি ধামোর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আঃলীগের সহ-সভাপতি আবু তাহের মোঃ দুলাল। এছাড়াও ওই ইউনিয়নের প্রত্যেকটি কাজের সরদার হলো উপজেলা আঃলীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলামের সহযোগী এনামুল হক। তিনি বর্তমানে বহাল তবিয়তে বেশ কয়েকটি, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) এবং কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের কার্যক্রমের দ্বায়িত্ব পালন করছেন। 



কিন্তু গত বৃহস্পতিবার মালগোবা গ্রামের রাস্তার সিসি ঢালাইয়ের কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠে। কাজের প্রথম দিকে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠে৷ পরে স্থানীয়দের তোপের মুখে নতুন ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও রাস্তায় মোট ৫ ইঞ্চি ঢালাইয়ের কথা থাকলেও সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উত্তর-দক্ষিণের ওই রাস্তার পশ্চিম দিকটা কিছুটা উঁচু এবং পূর্ব দিকটা কিছুটা নিচু। 


তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কার্য্য সহকারী শাহিরুল ইসলামের উপস্থিতিতে ৫ ইঞ্চি ঢালাই হচ্ছে কি-না তা দেখতে গেলে দেখা যায়, রাস্তার পশ্চিম সাইডে সাড়ে ৩ ইঞ্চি থেকে পৌনে ৪ ইঞ্চি এবং পূর্ব সাইডে সাড়ে ৩ ইঞ্চি থেকে ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। এবিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। 



নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, কাজ একেবারেই ভালো হচ্ছেনা। ৫ ইঞ্চির জায়গায় প্রায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি ঢালাই করা হচ্ছে। এর এই কাজের শুরুতে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছিল। পরে এলাকার লোকজন সেটা ধরলে ইটের খোয়া পরিবর্তন করে দেয়।



এবিষয়ে ওই প্রকল্পের সভাপতি ও ধামোর ইউপির চেয়ারম্যান আবু তাহের মোঃ দুলাল জানান, ওখানে তো অফিসের লোক রয়েছে। কাজ ভালো হওয়ার কথা। ৫ ইঞ্চি ঢালাইয়ের কম হলে অফিসের লোক বিষয়টি অবশ্যই দেখবে৷ তবে আমি ওখানে কথা বলছি যেন ৫ ইঞ্চির কম ঢালাই না হয়।



ওই প্রকল্পের সরদার এনামুল হক জানান, এসব কাজের মধ্যে একটু-আধটু কম-বেশি হতেই পারে। যেখানে বড় বড় কাজ হয়, কোটি কোটি টাকার কাজ হয় সেখানে কেন সাংবাদিকদের চোখ যায়না। 


পরে ওই কাজের ভুলত্রুটি ধরতে যাওয়ায় প্রতিবেদককে অনেক হুমকি ধামকি দেন সরদার এনামুল। তিনি প্রতিবেদককে প্রশ্ন করে বলেন, কেন কাজ দেখতে যাওয়া হয়েছে আর কেন এই-বা পিআইও'কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আজ পর্যন্ত কোনো সাংবাদিক আমার বিরুদ্ধে লিখতে পারেনি। সব সাংবাদিক টাকার জন্য কাজ করে। ১০ টাকার জায়গায় ২০ টাকা চাইতে পার কিন্তু নিউজ কেন করবা। তিনি আরো বলেন, আমার কাজের যদি কোনো রিপোর্ট হয় তাহলে অবশ্যই একটা সিন্ডিকেট করতেই হবে।



এবিষয়ে আটোয়ারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অ:দা:) মোঃ জিয়াউর রহমান মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি সম্বন্ধে আমি অবগত ছিলাম না আপনার কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারলাম। রোববার অফিস খোলার পরে আমি বিষয়টি দেখব। তবে, সবকিছু না জেনে এই মুহূর্তে আর কোন মন্তব্য প্রকাশ করতে চাননি তিনি।