lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫
Last Updated 2025-06-27T11:15:07Z
ব্রেকিং নিউজ

ডোমারে ঈদগাহ ময়দান ও মাদ্রাসা কমিটি নিয়ে বিবাদ ইউএনও বরাবর অভিযোগ

Advertisement


 

মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডোমারে ঐতিহ্যেবাহী শতবর্ষী ছোটরাউতা একরামিয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন করে কমিটি গঠন না করা নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে। উক্ত কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ঈদগাহ ময়দানে অংশগ্রহণকারী ২৭টি জামাতের মধ্যে প্রায় ২৩টি জামাতের সভাপতি সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শায়লা সাঈদ তম্বী বরাবরে দাখিল করেছেন।


বৃহস্পতিবার ২৬শে জুন বিকেলে উপজেলার ছোটরাউতা ঈদগাহ ময়দান মাঠে পূর্বের ম্যানেজিং কমিটি  তড়িঘড়ি করে প্রতিপক্ষের কাউকে না ডেকে আলোচনা সভার মাধ্যমে পূর্বের কমিটিকে বহাল রেখে কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত দেন। বিষয়টি নিয়ে অপর পক্ষের মাঝে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।


গত ১৮ই জুন ছোটরাউতা একরামিয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান মাদ্রাসা ও জামাতবাসীর পক্ষে ২৩টি জামায়াতের সভাপতি /সম্পাদকের স্বাক্ষরকৃত একটি অভিযোগ পত্র ইউএনও বরাবর দাখিল করেন পূর্ব চিকনমাটি দিঘলটারী জামে মসজিদের সদস্য এবং একই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম।


অভিযোগ পত্রে তারা উল্লেখ করেন ছোটরাউতা ঈদগাহ ময়দান ও মাদ্রাসার নামে ১৭ বিঘা আবাদি জমি রয়েছে, এ ছাড়াও জামাতবাসীর দান খয়রাত এবং চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ টাকা আয় হয়ে থাকে। ময়দান ও মাদ্রাসা পরিচালনা করার জন্য ৬ বছর পূর্বে উপজেলা আ"লীগের সক্রিয় সদস্য আবু সুফিয়ান লেবু মাষ্টারকে সভাপতি এবং তারই চাচাতো ভাই আ"লীগের সক্রিয় সদস্য খায়রুল ইসলামকে সহ-সভাপতি এবং পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড আ"লীগের  সভাপতি অহিদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ও বাবলু ইসলামকে অর্থ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ৫ নং ওয়ার্ড আ"লীগের সভাপতি অহিদুল ইসলাম নীলফামারী-০১ ডোমার-ডিমলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের বাবা ২০১৮ইং সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তাদের নির্বাচনী গাড়ি বহরে হামলার মামলায় জামিনে রয়েছেন। অতীব দুঃখ এবং পরিতাপের বিষয় এই যে উক্ত কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়া সত্বেও বিগত কয়েক বছর ধরে কোন মিটিং করছেনা বা নতুন করে কমিটি গঠনের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন না। পবিত্র ঈদ-উল আজহার নামাজের দিন প্রচন্ড তাপদাহ এবং প্রখর রোদে ময়দানে মুসল্লীগনের নামাজ আদায়ের জন্য কোন সামিয়ানা না টাঙানোর কারণে মুসল্লীগনসহ জামাতবাসীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। দীর্ঘদিন ধরে আয় ব্যায়ের কোন হিসেব তারা দিচ্ছে না, আয় ব্যায় হিসাবের বিষয়ে তাদেরকে অবগত করা হলে তারা ফ্যাসিষ্ট স্টাইলে বলে আমরা কাউকে হিসাব দিতে বাধ্য নই। এর পাশাপাশি উক্ত প্রতিষ্ঠানের আয়ের টাকা ব্যাংকে রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও সেই টাকা ব্যাংকে জমা না রেখে সেই টাকা দিয়ে তারা নিজ নিজ ব্যবসা বানিজ্যে পরিচালনা করছেন। বর্তমানে সারাদেশ থেকে যখন ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী উৎখাত হলেও উক্ত ঈদগাহ ময়দান ও মাদ্রাসা কমিটিতে তারা বহাল তবিয়তে রয়েছেন।


এবিষয়ে ছোটরাউতা ঈদগাহ ময়দান ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য জুলফিকার আলি ভুট্টার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এই পরিচালনা কমিটি নানা ধরনের অনিয়মে জর্জরিত, আয় ব্যয়ের কোন হিসাব নাই, আমরা মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে  প্রতিষ্ঠানের টাকা জমা রাখার বিষয়ে, অথচ এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি, তারা প্রতিষ্ঠানের টাকা দিয়ে নিজ ব্যবসার কাজে ব্যবহার করছে, তা না হলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও কেন তারা আজবধি ব্যাংকে একাউন্ট করলোনা। জমির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ১৬/১৭ বিঘা জমি রয়েছে, তবে জমিগুলো ওপেন ডাক হয়না, দীর্ঘদিন ধরে যাদের কাছে রয়েছে তারাই নেয়, তাদের কাছেই সামান্য টাকার বিনিময়ে বাৎসরিক চুক্তিতে দেয়া হয়েছে। অথচ ওপেন ডাকের মাধ্যমে যদি জমিগুলো ডাক দিতো তাহলে প্রতিষ্ঠানে বাৎসরিক অনেক টাকা আয় হইতো কিন্তু এখানেই যত অনিয়ম। এছাড়া এবারের কোরবানির ঈদে প্রচন্ড তাপদাহ এবং প্রখর রোদে মুসল্লীগন প্রচন্ড কষ্ট নিয়ে নামাজ আদায় করেছেন। ময়দানে সামিয়ানাও টাঙানো হয়নি। এতে করে বিভিন্ন এলাকা থেকে ময়দানে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লীগন ভীষণ ক্ষুব্ধ। এইসব বিষয় নিয়ে নানা মনে নানা প্রশ্নের সন্ধিহান দেখা দিয়েছে। গতকালকে তারা মিটিং করছে অথচ তারা আমাকে ডাকেনি। এই প্রতিষ্ঠানে তারা ফ্যাসিবাদীর দোসর হিসেবে কাজ করছে। তাছাড়া এরা তো সকলেই উপজেলা এবং ওয়ার্ড আ"লীগের পদধারী নেতা।  


এবিষয়ে ছোটরাউতা ঈদগাহ ময়দান ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু সুফিয়ান লেবু মোবাইল নম্বরে একাধিক বার কল দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য প্রদান করা সম্ভব হয়নি।


এবিষয়ে ছোটরাউতা ঈদগাহ ময়দান ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অহিদুল ইসলাম জানান, আমরা এই ঐতিহ্যেবাহী ঈদগাহ ময়দান ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিতে ৪/৫ বছর যাবৎ রয়েছি, আমাদের সময় যা উন্নয়ন হয়েছে তা দৃশ্যমান। তবে মুসল্লীরা যদি কমিটি ভাংতে না চায় সে ক্ষেত্রে আমাদের করনীয় কি, তিনি আরও বলেন, এখানে মূল যে গন্ডগোলের ইসু সেটা হচ্ছে আমাদের ময়দানের দক্ষিণে প্রতিষ্ঠানের নামে ৪৫ শতক জমি রয়েছে এই জমিতে কতিপয় লোকজন নাকি এবতেদায়ী মাদ্রাসা করবে, এখানে মাদ্রাসা খুললে তারা নিয়োগ বানিজ্যে করবে এই কন্ডিশনে আমরা রাজি না হওয়ার কারণে তারা নানা রকম প্রপাকান্ড ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। সবকিছুর মূলেই হচ্ছে এই ৪৫ শতক জমি। আর ব্যাংক একাউন্টের বিষয়টি এতোদিনে করা হয়নি তবে সামনে করবো ইনশাআল্লাহ। এবার ঈদে সামিয়ানার বিষয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেটা মুলত ডেকোরেটরের লোকদের কারণে হয়েছে। গত ৪/৫ জুন পর্যন্ত আকাশে বৃষ্টি ছিল, আর ডোকোরেটরের ছেলেটা শেষ মূহুর্তে এসে বলে আমার দ্বারা সামিয়ানার কাজ করা সম্ভব নয়, পারলে আপনি অন্য লোক ঠিক করেন। আর জমির বিষয় আমাদের এখানে ওপেন ডাক হয়না, যারা দীর্ঘদিন ধরে বাৎসরিক চুক্তি নেয় তারাই পূর্ণরায় বছর শেষ নতুন করে চুক্তির মাধ্যমে নিয়ে