lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
Last Updated 2023-09-28T13:40:36Z
আইন ও অপরাধ

কুড়িগ্রামে অগ্রণী ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৪৮লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Advertisement


এম এস সাগর,  কুড়িগ্রাম:-রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড শাখার অফিসার নিখিল চন্দ্রসহ তিন জন কর্মকর্তা যৌথভাবে অতি-গোপনে প্রায় ২৫দিন পুর্বে সরকারের ফান্ড যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ৪৮লাখ তুলে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। এ তথ্য জানতে পেরে রাজারহাট উপজেলাসহ কুড়িগ্রাম জেলা সমূহের অগ্রণী ব্যাংকের সঞ্চয়কারী, সিসি ও বিভিন্ন পর্যায়ের ঋণ গ্রহীতা শেয়ার হোল্ডার ব্যক্তিদের মাঝে অত্র ব্যাংকের উপর থেকে আস্থা, আত্মবিশ্বাস উঠতে শুরু করেছে এবং তারা এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট উধ্বতর্ন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপসহ সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।


জানা গেছে, কুড়িগ্রামের রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড শাখার অফিসার নিখিল চন্দ্রসহ তিন জন কর্মকর্তা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ৪৮লাখ টাকা যৌথভাবে তুলে আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি জেনে প্রমাণ পাওয়ায মাত্র কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আঞ্চলিক কার্যালয়ের এজিএম মোঃ আখতার হাসান বিষয়টি গোপন রেখে অভিযুক্ত অফিসার নিখিল চন্দ্রকে কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আঞ্চলিক কার্যালয়ের ওএসডি করেন এবং অপর দুই কর্মকর্তাকে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড অন্য শাখায় বদলী করেন। ঘটনাটি ধামাপাচা দিতে কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আঞ্চলিক কার্যালয়ের এজিএম মোঃ আখতার হাসানের নির্দেশে এজিএম অফিসের অফিসার আসরাফুজ্জান বাবুসহ কয়েকজন কর্মকর্তা জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসার অভিযোগ করেন একাধিক ব্যাংক গ্রাহকরা। অপরদিকে রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক শাখা ম্যানেজার হিসেবে পবিত্র কুমার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে তিনি গ্রাহকদের সাথে বিভিন্ন সময় অসদাচরণ করে আসছেন। বন্যার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকসহ ব্যবসায়ীদের নানা অজুহাতে ঋণসেবা থেকে বঞ্চিত করে আসছেন বলে অনেক গ্রাহকের অভিযোগ। সম্প্রতি ভিতরবন্দ অগ্রণী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার থাকাকালীন পবিত্র কুমার গ্রাহকদের সাথে বিভিন্ন সময় অসদাচরণ করার অভিযোগ রয়েছে। পবিত্র কুমার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা ও একজন প্রভাবশালী নেতার দাপটে সংশ্লিষ্ট সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট তদবির করে রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক শাখা ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পান এবং গ্রাহকদের সাথে বিভিন্ন সময় অসদাচরণ করে আসছেন।


সম্প্রতি রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড শাখার অফিসার নিখিল চন্দ্র সহতিন জন কর্মকর্তা সরকার ফান্ড যুব উন্নয়নের অর্থের লোভ সামলাতে না পেরে তারা তিনজন যৌথভাবে গোপনে প্রায় ২৫দিন আগে সরকার ফান্ড যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ৪৮লাখ তুলে আত্মসাৎ করেন। রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার পবিত্র কুমার বিষয়টি জানতে পেরে প্রায় এক সাপ্তাহ ঘটনাটি গোপন করে রাখেন এবং পরবর্তীতে কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংকের এজিএমকে জানালে এজিএম মোঃ আখতার হাসান তৎতক্ষণিকভাবে সরকারের অর্থ আত্মসাৎকরী অভিযুক্ত নিখিল চন্দ্রকে কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আঞ্চলিক কার্যালয়ের ওএসডি করে রাখেন এবং অপর দুই কর্মকর্তাকে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড অন্য শাখায় বদলী করেন এবং গোপনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে নামমাত্র তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।


রাজারহাট উপজেলাসহ জেলার অগ্রণী ব্যাংকের সঞ্চয়কারী, সিসি ও বিভিন্ন পর্যায়ের ঋণ গ্রহীতারা বলেন, আমরা ব্যাংকে টাকা রাখি কারণ অনেক নিরাপদ। এই ঘটনা জানার পর থেকে অগ্রণী ব্যাংকের উপর থেকে আমাদের বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্ট উধ্বতর্ন কর্তৃপক্ষের কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।


রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড শাখার সাবেক অফিসার নিখিল চন্দ্র ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা তিনজন ভুল বুঝতে পেরে ৪৮লাখ টাকা ব্যাংকে জমা করেছি। যা হবার তো হচ্ছে। এই বিষয়ে রাজারহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার দুই মিডিয়াকর্মীকে সংবাদ প্রচার বন্ধ করতে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়েছি। নিউজ প্রকাশ বন্ধ রাখতে অনুরোধ করেন তিনি।


রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার পবিত্র কুমার বলেন, অফিসার নিখিল চন্দ্র সহতিন জন কর্মকর্তা কে অত্র ব্যাংক থেকে বদলী করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।


কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আঞ্চলিক কার্যালয়ের এজিএম মোঃ আখতার হাসান এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, দেখা হলে কথা হবে। তেমন কোন ঘটনা না বলে ফোন কেটে দেন।


কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আঞ্চলিক কার্যালয়ের অফিসার আসরাফুজ্জান বাবু (০১৭১৬২৯৮০৯৩) মোবাইল নম্বর থেকে বলেন, আপনি এজিএম স্যার কে ফোন দিয়েছেন। এজিএম স্যার ব্যস্ত আছে। আপনার সাথে কথা বলতে বললো। উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিখিল চন্দ্রসহ তিন জন যতটুকু অপরাধ করেছে তার তদন্ত এখনো চলছে এবং তাদের কে তৎতক্ষণিকভাবে বদলী করা হয়েছে। তাদের কে ঐ শাখা থেকে আলাদা করা হয়েছে যাতে ঐ শাখায় তদন্তে বিঘ্ন না ঘটে। তদন্ত চলছে। নিখিল চন্দ্রকে কুড়িগ্রাম অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড আঞ্চলিক কার্যালয়ের ওএসডি করে রাখা হয়েছে এবং অপর দুই কর্মকর্তাকে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড অন্য শাখায় বদলী করা হয়েছে।


অগ্রণী ব্যাংক রংপুর বিভাগীয় অফিসের ডিজিএম মোস্তফা-ই-কাদের এর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি এ ঘটনা আড়াল করে বলেন, কুড়িগ্রাম ও রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক শাখা আমার দায়িত্বে না। রাজারহাট অগ্রণী ব্যাংক শাখা কুড়িগ্রাম এজিএমের আওতায়। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমার আওতায় কুড়িগ্রাম নয়। আপনি কুড়িগ্রামে কথা বলেন। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না।


কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, বিষয়টি আপনার নিকট থেকে জানলাম। তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।