Advertisement
বুলবুল হাসান : - তাঁতসমৃদ্ধ পাবনার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের তাঁতীরা আজ অস্তিত্ব সংকটে। কর্মহীন তাঁতী সম্প্রদায় মহাজনের কাছে ঋণে জর্জরিত। ব্যবসায় মন্দা ভাব, রঙ, সুতার দামের উর্ধগতি ও উৎপাদিত কাপড়ের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অস্তিত্ব সংকটে পরেছে বেড়া উপজেলার তাঁতীরা । ক্রমাগত লোকসানে আজ ধংসের দ্বারপ্রান্তে এ শিল্প। পাবনা জেলার নয় টি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ এ শিল্পের উপর নির্ভরশীল হলেও লোকসানের কারনে বেঁচে থাকার তাগিদে পৈত্রিক পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশাকে বেছে নিয়েছে অনেকেই। অনেকে আবার তাঁত বন্ধ রেখে ঢাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক হিসাবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। কাপড়ের হাট গুলো জনশূন্য হয়ে পড়েছে ফলে জৌলুসতা হারিয়েছে জেলার ঐতিহ্যবাহি কাপড়ের হাট- বাজার। সরেজমিনে দেখা যায় বেড়ার হাটুরিয়া, বাটিয়াখড়া, নেওলাইপাড়া, রাকসা চকপাড়া ও সাফুল্লাপাড়া গ্রামের অনেক তাঁত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অবশিষ্ট যেগুলো চালু রয়েছে সেগুলোও বন্ধ হওয়ার পথে। অথচ দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে তাঁত শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। হস্তচালিত তাঁতে বছরে প্রায় ৭০ কোটি মিটার বস্ত্র উৎপাদিত হয় যা অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৪০ ভাগ মিটিয়ে থাকে। এ শিল্প থেকে মূল্য সংযোজন করের পরিমাণ প্রায় ১৫০০.০০ কোটি টাকা। দেশে হস্তচালিত তাঁত শিল্প এদেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্প হিসেবে সুনাম অর্জন করেছে।
তাঁত কারখানার মালিক বোখারী হাসান বলেন রঙ ও সুতার দাম ক্রমাগত বাড়লেও বাড়ছে না কাপড়ের দাম ফলে অনেকে দিশেহারা হয়ে তাঁত কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। আগে এই গ্রামে এক হাজারেরও বেশি তাঁত কারখানা চললেও এখন মাত্র পঞ্চাশ খানা চলে। লোকসানে অনেক তাঁত কারখানা বন্ধ।
নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মাসুম বলেন, তাঁতশিল্প কে টিকিয়ে রাখতে তাঁত বোর্ড গঠন ও মধ্যস্বত্বভোগীদের তৎপরতা বন্ধ করে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সহজ শর্তে তাঁতীদের ঋণ সহায়তা করার মাধ্যমে এ শিল্পকে রক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে।
বেড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি রিজু তামান্নার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, এ উপজেলায় কোনো তাঁতবোর্ড নেই। ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পকে টিকে রাখতে দরকার সরকারের পক্ষ থেকে পুজি ও পৃষ্ঠপোষকতা না হলে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। ফলে বেকারত্বের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তাই এই শিল্প কে টিকে রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।