Advertisement
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের এগারোমাথায় প্রায় ৫টি স্পটে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অমান্য করে অবাধে দুই ফসলি জমির মাটি কাটছে এরশাদ আলী এবং কয়েকটি মাটি খেকো চক্র। এক্সক্যাভেটর (ভেকু) দিয়ে গর্ত করে এসব মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন পরিবেশ দপ্তরের লাইসেন্স বিহীন ইট ভাটাগুলোতে। এতে উর্বরতা হারাচ্ছে ফসলী জমিগুলো। নাগেশ্বরী উপজেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে মাটি খেকো চক্ররা ফসলি জমির মাটি অবাধে কাটছেন।
জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত জেলা কুড়িগ্রাম। সীমান্ত ঘেষাঁ, ১৬টি নদ-নদী বেষ্টিত ও সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চল। নাগেশ্বরী উপজেলা ও পৌরসভার প্রান্তিক চাষিরা বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলা করে জমিতে দুইবার ফসল চাষ করে পরিবারের মুখে হাসি ফোটান। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, নাগেশ্বরী উপজেলার মাটি উর্বর, এঁটেল দোআঁশ প্রকৃতির। এ মাটিতে পানি নিষ্কাশন কম হয় বলে অল্প সেচেই ভালো ফসল ফলে। ধান, পাট, আখ, ভুট্টা ও শাকসবজি এই অঞ্চলের প্রধান ফসল ফলান কৃষকরা।
নাগেশ্বরীর নেওয়াশী ইউনিয়নের এগারোমাথা ও গাগলা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক মনু মিয়া, বাবলু, সোফিয়া রহমান জানান, নেওয়াশী ইউনিয়নের এগারোমাথা সওজের রাস্তা সংলগ্ন (গাগলা-এগারোমাথা নুরানি ও হাফেজী মাদ্রাসা) সংলগ্ন দুই ফসলী জমিতে মাটি কাটছে এবং এগারোমাথা ব্যাংঙ দোলার পাড় গ্রামের ইয়াসির মেম্বারের দুই ফসলী জমিতে এরশাদ আলী চক্র দাপটের সাথে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ নেতা নাগেশ্বরী জনতা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী মতিয়ার রহমানের মেসার্স জেবিএল ইট ভাটায়। ফলে নষ্ট হচ্ছে দুই ফসলি জমি ও পাকা রাস্তাঘাট। শিক্ষার্থী ও পথচারীদের চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়ছে রাস্তাগুলো। মাটি খেকো ব্যবসায়ী চক্র এরশাদ আলী কৃষকদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে ৩হাজার টাকায় ১হাজার মাটি কিনে নিয়ে এগারোমাথার ইট ভাটাতে ১হাজার মাটি ৮হাজার থেকে ১০হাজার টাকা বিক্রি করছে। এতে তারা লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি।
মাটি খেকো সিন্ডিকেট চক্রের এরশাদ আলী জানান, যে সব জমি থেকে মাটি কাটা হচ্ছে, সে সব জমির কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। জমির মালিকরা স্বেচ্ছায় মাটি বিক্রি করছেন। স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে দু-একদিনের মধ্যে আপনার সঙ্গে কথা হবে।
নাগেশ্বরী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বদরুজ্জামান রিশাদ বলেন, আমাদের নজরে পড়লে বা কেউ জানালে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে ভেকু চালু হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক অন্নপূর্ণা দেবনাথ বলেন, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অমান্য করে ফসলি জমির মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


