Advertisement
মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় এবার মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, কৃষি বিভাগের যথাযথ পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় সার ও বীজের সহজলভ্যতার কারণে এই বছর কুমড়া চাষে ভালো ফলন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা। রুহিয়া থানার অন্তর্গত ইউনিয়ন সমুহের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকেরা ব্যাপকভাবে কুমড়া চাষ করেছেন। একই জমিতে অন্য ফসলের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে এসব কুমড়া চাষ করেন কৃষকরা। আবার অনেক কৃষক এগুলো এককভাবে চাষ করেন। এক্ষেত্রে অবশ্য ফলনও বেশি পাওয়া যায়। রুহিয়ায় দিনদিন কুমড়ার চাষ বাড়ছে। এক্ষেত্রে চাষিরা বর্তমানে বিভিন্ন হাইব্রিড জাতের কুমড়া চাষকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কেননা এসব জাতের গাছ থেকে ফলন বেশি পাওয়া যায়। কুমড়ার আকারও অনেক বড় হয়। আর বাজারে বড় আকারের কুমড়ার দামও বেশি পাওয়া যায়। শীতকালের শুরুতেই মিষ্টি কুমড়ার চারা রোপণ শুরু হয়, এবং এপ্রিল-মে মাসে এর ফল সংগ্রহ করা হয়। বর্তমানে কুমড়া ক্ষেতজুড়ে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে শত শত সোনালী কুমড়া, যা দেখে খুশি কৃষকেরা। রুহিয়া থানার ঢোলারহাট ইউনিয়নের কৃষক গোপাল রায় বলেন, “এ বছর ১ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা, যদি বাজারে সুষ্ঠু দাম থাকে। এবার আশা করছি সবমিলিয়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো দাম পাবো, অন্যদিকে মিলন নামে এক কৃষকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এবার আমি গত বছর থেকে বেশি জমিতে কুমড়া চাষ করেছি আমার তিন বিঘা জমিতে ৩০ হাজারের বেশি খরচ হয়েছে এবং আমার জমিতে গত বছর এর থেকে অনেক বেশি ফলন হয়েছে। আশা করি গত বছর এর থেকে অনেক লাভ হবে এবার। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বছর প্রায় ২৫০০ হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ করা হয়েছে। ফলন ৩০ থেকে ৩৫ টন /হেক্টরে, হাইব্রিড এর ক্ষেত্রে আরো বেশি ফলন হয়। ফলন এবং বাজারমূল্য দুই-ই ভালো হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসিরুল আলম বলেন, “মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহ বাড়ছে। এটি স্বল্পমেয়াদী, কম খরচে বেশি লাভজনক ফসল। কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে আমরা তাদের পাশে রয়েছি।” তবে কিছু কৃষক অভিযোগ করেছেন, পাইকারদের মাধ্যমে ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে কুমড়া গেলেও, ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় তারা কিছুটা হতাশ। এ বিষয়ে কৃষকবান্ধব নীতিমালা ও বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা।