Advertisement
ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘এটা সত্য যে, আমাদের মাঝেও কিছু সীমিত দুর্নীতি রয়েছে। দুর্নীতি প্রতিরোধে সবার আগে ‘সরবরাহ পক্ষ’ বন্ধ করতে হবে। এটি বন্ধ হলে ‘চাহিদা পক্ষ’ আপনা-আপনিই বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের সমাজে মিথ্যাচার দিয়ে শুরু হয়ে আস্তে আস্তে দুর্নীতি ঢুকে যায়। আমাদের কমিশনের জনবল অনেক কম। সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়েই আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জনবল বাড়ালে জনগণের ওপর ট্যাক্সের বোঝা বাড়বে এই বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।’ রবিবার (১৮ মে) সকালে মৌলভীবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত দুদকের ১৭৫তম গণশুনানিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আয়োজনের এবং মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির (দুপ্রক) সহযোগিতায় আয়োজিত গণশুনানিতে দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেমন একটি বাহিনীর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার উদ্ভব হয়েছিল, তেমনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বেশ কিছু ব্যক্তি ভুয়া সমন্বয়ক বের হয়েছে। এভাবে দুদকের ভুয়া চেয়ারম্যান সেজে অভিযান করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। দুদকের ভুয়া চেয়ারম্যান পেলে তাদের ধরবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গণশুনানির উদ্দেশ্য কাউকে ছোট করা নয়। বরং সচেতনতা সৃষ্টি ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য। আমরা বিশাল পরিবর্তনের মাধ্যমে এখানে এসেছি। আমাদের বৈষম্য দূর করতে হবে। আমরা মৌলভীবাজার জেলাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারলে আমাদের আনন্দ লাগবে। সব অফিসেই দুর্বৃত্ত আছে। প্রতিটি অফিসে প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি মাসে একবার গণশুনানি করবেন। দেখবেন এমনিতেই দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে।’
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ, কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ মো. আক্তার হুসাইন, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ. জাহাঙ্গীর হোসেন, দুদক সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রাফি মো. নাজমুস সাদাৎ ও সমন্বিত হবিগঞ্জ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. এরশাদ মিয়া।
গণশুনানিতে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে সেবাপ্রাপ্তিতে হয়রানির শিকার বা সেবা বঞ্চিত সংক্ষুব্ধ জনসাধারণ তাদের অভিযোগসমূহ কমিশনের সামনে তুলে ধরেন। দুদক চেয়ারম্যান সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঘুস, দুর্নীতি ও হয়রানীর শিকার নাগরিকদের অভিযোগ শুনে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেন।