Advertisement
ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারে তিনটি ঔষধ কোম্পানির ডিপোতে ডাকাতির ঘটনায় এই চক্রের মূল হোতাসহ দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। এর মধ্যে ডাকাত দলের নেতা শামীম আহমেদ (৪৫) ডাকাতির ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছেন। মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী মো. মাহবুবুর রহমান শনিবার (২৪ মে) গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজারের একমি ঔষধ কোম্পানির ডিপো থেকে ৪৮ হাজার টাকা, ১২ ফেব্রুয়ারি বেক্সিমকো ঔষধ কোম্পানির ডিপো থেকে ৬৮ লাখ টাকা এবং সবশেষ ১০ মে ওরিয়ন ঔষধ কোম্পানির ডিপো থেকে ৮ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। সব ঘটনাতেই মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। একমি ঔষধ কোম্পানির ডিপোতে লুটের ঘটনার পরপরই সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেনের নেতৃত্বে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী মো. মাহবুবুর রহমান, উপপরিদর্শক (এসআই) জয়ন্ত সরকার, উপপরিদর্শক (এসআই) হিরণ বিশ্বাস, উপপরিদর্শক (এসআই) উৎপল সাহা, উপপরিদর্শক (এসআই) রানা মিয়া, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাইদুর রহমানকে নিয়ে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হয়। ওই টিমের সদস্যরা সিসি ক্যামেরা ফুটেজ, গোপন সূত্র ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ১৭ মে রাত আনুমানিক সাড়ে ৩ ঘটিকার সময় হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার পশ্চিম ভাদেশ্বর গ্রামে অভিযান চালিয়ে একই জেলার সদর উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের মৃত সিরাজ আলীর ছেলে তিনটি ডাকাতি ঘটনার মূলহোতা শামীম আহমেদকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার হেফাজত থেকে পুলিশ লুট করা টাকা থেকে ১৩ লাখ টাকায় কেনা একটি নোহা মাইক্রোবাস এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি পালসার মোটরসাইকেল, ব্যবহৃত কেডস, ইলেকট্রিক কাটার ও হেক্সোবেøড জব্দ করেছে। গ্রেপ্তারের পর চার দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শামীম আহমেদকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি ২২ মে বিজ্ঞ আদালতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত মর্মে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। এর আগে মুকিত মিয়া নামে তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
শনিবার (২৪ মে) মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ডাকাতি ঘটনার পর থেকেই কাজ শুরু করি। প্রাথমিক তদন্ত শেষে প্রথমে মুকিত মিয়াকে গ্রেপ্তার করি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ আর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডাকাতি ঘটনার মূলহোতা শামীমকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শামী স্বীকার করে চার সদস্যের একটি চক্র মোটরসাইকেল ব্যবহার করে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আসা যাওয়া করে। তারা মৌলভীবাজারে তালা কেটে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একই স্টাইলে একই ধরনের তিনটি প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়েছে। এই চক্রটি সিলেট অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে এমন অপকর্ম করে আসছে। তিন বছর আগে সিলেটের ওসমানীনগর থানা এলাকায় এটিএম বুথ ভেঙে টাকা লুটের ঘটনায় ঢাকা থেকে আসামি শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আমরা তিনটি ডাকাতি ঘটনায় জড়িত চক্রের বাকি সদস্যদেরকে গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছি।