lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
শুক্রবার, ৩ মার্চ, ২০২৩
Last Updated 2023-03-03T11:45:21Z
বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদ

পদের অভাবে ভারমুক্ত হতে পারছে না কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

Advertisement

 

সজীব আহম্মেদ রিমন,কুবি সংবাদদাতা:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পাঁচটি বিভাগ ও চারটি দপ্তরের কার্যক্রম চলমান ভারপ্রাপ্ত ও অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্তদের মাধ্যমে। কোনো কোনো দপ্তর প্রধানের পদে স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে অন্য পদের কর্মকর্তাকে ভারপ্রাপ্ত বা অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে, যা প্রায় ছয় থেকে দশ বছর যাবৎ। 

অনুসন্ধানে দেখা যায়, কুবির রেজিস্ট্রার, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রধানের দায়িত্বে আছেন 'ভারপ্রাপ্ত' কর্মকর্তা এবং জনসংযোগ দপ্তরের প্রধানের পদে 'অতিরিক্ত দায়িত্ব' পালন করছেন উপাচার্য দপ্তরের একজন কর্মকর্তা। 

পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক পদ শূন্য রেখে তার কাজ চলছে উপ-পরিচালক ড. মো. শাহাবুদ্দিনকে দিয়ে৷ তিনি একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের (চলতি দায়িত্ব) দায়িত্ব পালন করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে নেই কোনো স্থায়ী লাইব্রেরিয়ান। বর্তমান লাইব্রেরিয়ান পদে 'দায়িত্বরত' মো. মজিবুর রহমান মজুমদারকে ২০১৮ সালে দুর্নীতির মৌখিক অভিযোগে রেজিস্ট্রার থেকে লাইব্রেরিতে বদলি করা হয়। 

পরিচালকবিহীন শারীরিক শিক্ষা কার্যালয়ের কার্যক্রমও চলছে উপ-পরিচালক মনিরুল আলমের মাধ্যমে।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামাল উদ্দিন ভূইয়া জানান, আমি অর্থ ও হিসাব দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছি চৌদ্দ বছর৷ আমি যোগ্য বলেই তো এখানে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে৷ কিন্তু একজন মানুষ কত বছর একই পদে দায়িত্ব পালন করতে পারে? আমাদের আইনেই আছে ছয় মাসের বেশি কোনো পদের দায়িত্ব দিয়ে রাখা যায় না৷ স্থায়ী নিয়োগ দিতে হয়।

তিনি আরো বলেন, আগে আমাদের পরিচালক পদ ছিল না৷ ২০১৩ সালে সংশোধন করে পদটি তৈরি করা হয়েছে৷ এরপর আমি প্রায় ছয় বছর ধরে এই পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে আছি৷ 

এছাড়া নাম না প্রকাশ করা শর্তে উল্লিখিত দপ্তর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, আমাদের অন্যান্য দায়িত্ব থেকে এনে এখানে অতিরিক্ত কাজ দেয়া হচ্ছে৷ অনেকক্ষেত্রে আমার যে বিষয়ে দক্ষতা নেই সেই বিষয়গুলোও আমাকে করতে হচ্ছে৷ এতে আমার উপর একধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে পাশাপাশি কাজের গতিও ধীর হয়ে যাচ্ছে৷ 

এছাড়া ফার্মেসি, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কাজ চলছে ভারপ্রাপ্তের মাধ্যমে। 

রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সাধারণত অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকরাই বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পায়। কিন্তু যে বিভাগগুলোতে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক থাকে না সেখানে কোনো সহকারী অধ্যাপককে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা প্রক্টর পদে 'ভারপ্রাপ্ত' রীতির প্রচলন বেশ পুরোনো। বর্তমান প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীও তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন ভারপ্রাপ্ত হিসেবে। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে দশ জন প্রক্টর ১২ মেয়াদে প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করলেও তাতে সাত জন প্রক্টরই তাদের দায়িত্ব পালন করেন ভারপ্রাপ্ত হিসেবে৷ 

নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান বৃদ্ধি করতে হবে অবশ্যই যে পদগুলো খালি আছে তা পূরণ করতে হবে। যেখানে স্থায়ী লোকবল দরকার, সেখানে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে। শিক্ষক সংখ্যা বাড়াতে হবে। তাহলেই গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এই বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন জানান, আমরা স্থায়ী করতে পারছি না কারন আমাদের পদ নেই৷ ইউজিসি আমাদের যথেষ্ট পদ দিচ্ছে না৷ আমরা এই বিষয়ে তাদের বারবার বলছি৷ 

তিনি আরো বলেন, অনেকের ন্যূনতম যে দক্ষতা প্রয়োজন তা পূরণ করতে পারেন না৷ তাই তাদের উচ্চ পদে স্থায়ী নিয়োগ না দিয়ে ভারপ্রাপ্ত বা অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে৷