Advertisement
মাহতাবুর রহমান, নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইলিশের বাড়ি বরগুনা, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দর বনের অংশীদার বরগুনা। বাংলাদেশের দক্ষিনের প্রাকৃতিক নৈসর্গে ঘেরা জেলা বরগুনা। এই জেলার আয়তন ১,৮৩১.৩১ বর্গকিমি বর্তমান জনসংখ্যা ৮,৯২,৭৮১। ১৯৮৪ সালের এই দিনে বরগুনা জেলাবাসীর আন্দোলনের মুখে তৎকালীন সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেনারেল এইচ এম এরশাদ বরগুনা স্টেডিয়ামে জনসভায় বরগুনা মহাকুমাকে বরগুনা জেলা হিসাবে ঘোষণা প্রদান করেন। বরগুনা জেলার আজ ৩৮ তম জন্মদিন। বরগুনা জেলা ৬টি উপজেলা, ৬টি থানা, ৪টি পৌরসভা, ৪২টি ইউনিয়ন ও ২টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত। ১৯৮৪ সালের ১৩৬৯ বঙ্গাব্দে ১৫ ফাল্গুন ২৮ ফেব্রুয়ারি বরগুনা জেলায় রুপান্তরিত হওয়ার আগে ১৯৬৯ সালে বরগুনা মহাকুমা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং পটুয়াখালী জেলার অন্তর্গত ছিল।
সৈকত সৌন্দর্যের বেলা ভূমির দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি। এখানে রয়েছে শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত নামে অত্যন্ত পর্যটন বান্ধব সৈকত। পশ্চিমে বলেশ্বর নদীর জলরাশির তীরঘেষে পরিবেশের ফুসফুস সুন্দরবন বনাঞ্চল। পূর্বে পটুয়াখালী আর উত্তরে ঝালকাঠি, বরিশাল জেলা অবস্থিত। মুসলিম ও সনতান ধর্মানুলম্বীর পাশে আদিবাসী রাখাইন উপজাতির বসবাস রয়েছে বরগুনা জেলায়।
বরগুনার বেতাগী উপজেলায় রয়েছে মোঘল আমলে স্থাপিত বিবি চিনি মসজিদ । ধারণা করা হয় চিনি বিবির নামে এলাকার নামকরণ করা হয় বিবি চিনি। স্থানীয় পার্যায়ে আলোচনা আছে ঢাকার লালবাগের কেল্লায় শায়িত পরী বিবির বোন তিনি। তালতলী উপজেলায় রয়েছে বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ একাডেমী, সোনাকাটা সমুদ্র সৈকত ও সোনাকাটা ইকোপার্ক, ফাতরার বন, বিহঙ্গ দ্বীপ বা ধানসিড় চর, শুভ সন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত, পাথরঘাটা উপজেলায় রয়েছে সুন্দর বনের একাংশ, হড়িণঘাটার লালদিয়া সমুদ্রসৈকত, দক্ষিন বঙ্গের পুরাতন পুলিশ স্টেশন রয়েছে আমতলীতে। ১৯০১ সালে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নে পুলিশ স্টেশন স্থাপিত হয় যা ১৯০৬ সালে আমতলী উপজেলা সদরে স্থানান্তরিত করা হয়। আমতলী উপজেলাকে বলা হয় হার্ট অফ দ্যা সাউথ বেঙ্গল। বরগুনা সদরে রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র নৌকা জাদুঘর।
বরগুনা জেলার অধিবাসীদের মধ্যে প্রধান কাজ কৃষিকাজ। ধানের পড়ে বরগুনায় দ্বিতীয় কৃষিকাজ তরমুজ চাষ। বরগুনার আরেকটি পরিচয় রুপালি ইলিশের জীবিত বাড়ি হিসাবে খ্যাত। বঙ্গোপসাগর ও তিনটি প্রধান নদী বিষখালী, বলেশ্বর ও পায়রা (বুড়িশ্বর) নদী থেকে ইলিশসহ সামুদ্রিক মৎস আহরণ করে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলছে।
বরগুনা নামের ইতিহাসের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া না গেলেও উত্তারঞ্চল থেকে এখানকার বনভূমি থেকে কাঠ সংগ্রহ করতে এসে ভাটির সময় খরস্রোতা নদীতে নৌকার বড় বড় গুন টানতে হতো বলে বরগুনার নামের উৎপত্তি। আবার শোনা যায় কোন এক প্রতাপশালী রাখাইন নেতার নামানুসারে বরগুনার নামকরণ করা হয়।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন আজকের এই দিনে বরগুনা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে তাই বরগুনা জেলার সকল মানুষকে আমি শুভেচ্ছা জানাই। তিনি আরও বলেন আমি আশাকরি বরগুনা জেলা একদিন বাংলাদেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ জেলায় পরিনত হবে এবং তার সম্ভাবনাও রয়েছে তাই আমি বরগুনা জেলার সর্বময় মঙ্গল কামনা করি।