lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩
Last Updated 2023-01-24T06:11:45Z
জাতীয়

দরিদ্রতা দমাতে পারেনি মেধাবী শিমাকে: একাদশ শ্রেণিতে পেল ভর্তির সুযোগ: পড়ালেখা দায়িত্ব নিল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

Advertisement


 

বিধান মন্ডল, (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:-শিমা আক্তারের বয়স যখন মাত্র দুই বছর, তখন মারা যায় তার দিনমজুর বাবা। বাবার মৃত্যুর পর একমাত্র মেয়ে শিমা আক্তারকে মানুষ করার যুদ্ধে নামেন মা। তিনি নিজের জীবন-যৌবনকে বিসর্জন দিয়ে অন্যের বাসায় কাজ করে শিমার পড়ালেখা চালিয়ে যান। সেই শিমা এবার সালথা সরকারি কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। এতে শিমার মা খুশিতে আত্মহারা হলেও পড়ালেখার খরচ নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে শিমার পাঁশে এসে দাঁড়িয়েছে ইউসুফদিয়া স্কুল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনিকটি শিমার পড়ালেখার সমস্ত খরচ চালানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। 


মেধাবী শিক্ষার্থী শিমা আক্তার ফরিদপুরের সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া গ্রামের দিনমজুর মৃত সাখো খানের একমাত্র মেয়ে। জানা গেছে, সাখো খান অনেক দরিদ্র ছিলেন। অল্প কিছু জমির ওপর ছোট একটি টিনের ঘর ছাড়া কোনো সম্পত্তি ছিল না তার। তিনি অন্যের জমিতে দিমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শিমার জন্মের মাত্র দুই বছর পর সাখো খান মারা যান। এরপর তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম মাত্র দুই বছর বয়সি মেয়ে শিমাকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েন। একপর্যায় স্বামীর বাড়ি ছেড়ে পাশ^বর্তী ইউসুফদিয়া গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে যান। সেখানে থেকেই মেয়ে মানুষ করার চেষ্টা চালিয়ে যান তিনি।


শিমার মা নুরজাহান বলেন, আমার স্বামীর কোনো জমিজমা ছিল না। তিনি মারা যাওয়ার পর মেয়ে শিমাকে আমার মায়ের কাছে রেখে আমি একটি বাসায় বুয়ার কাজ শুরু করি। বুয়ার কাজ করে যা উপার্জন হতো, তা দিয়ে শিমার ভরণ-পোষণ ও পড়ালেখার খরচ চালাতাম। আমি শুধুমাত্র মেয়ের কথা চিন্তা করে বিয়েও করেনি। মেয়েই আমার কাছে সবকিছু মনে হয়েছে। শিমা এবার সালথা সরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় অনেক খুশি হয়েছি। এখন মনে হচ্ছে আমার কষ্টের সুফল পাচ্ছি।


তিনি আরও বলেন, শিমা কলেজে লেখপড়া শুরু করার পর ওর খরচ বেড়ে যাবে বলে চিন্তায় ছিলাম। তবে সে চিন্তাও দুর হয়েছে। শিমার পড়ালেখার খরচের দায়িত্ব নিয়েছে  ইউসুফদিয়া স্কুল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ইতোমধ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে শিমার নতুন কলেজে ভর্তির যাবতীয় খরচ দিয়েছে।  আমি মন থেকে সংগঠনটির জন্য দোয়া করি- আল্লাহ যেন সমাজের জন্য সংগঠনটিকে আরও কাজ করার তাওফিক দেয়।


ইউসুফদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ আলম বলেন, আমাদের স্কুলের সাবেক ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ইউসুফদিয়া স্কুল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। তারা সব সময় স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতনতা মূলক সেমিনার, অবসরে যাওয়া শিক্ষকদের খোজ খবর নিচ্ছে এবং এলাকায় সামাজিক কাজ করে যাচ্ছে। শিমা আক্তারের কলেজে লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়ায় এই সংগঠনের সবাইকে ধন্যবাদ।


ইউসুফদিয়া স্কুল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, সংগঠনের সদস্যদের আন্তরিকতা, পরামর্শ এবং প্রবাসী সদস্যদের সহযোগিতা নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক কাজ করে আচ্ছি। আমরা চাই সমাজে কেউ যাতে দারিদ্রতার কারনে লেখা পড়া থেকে যাতে পিছিয়ে না পরে।