Advertisement
আলমগীর হুসাইন অর্থঃ-
মৎস্য খামার ও ফসলী জমিতে পরিণত হয়েছে পাবনার অধিকাংশ নদী। এছাড়াও চলাচল উপযোগী নদী গুলোতে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সঙ্কট। অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৬টি নদীর প্রায় ৫০০ কিলোমিটার নৌপথ ক্রমাগত পলি জমে হয়ে গেছে নৌ চলাচলের অনুপযোগী। যে কারনে ব্যাপক হুমকীর মুখে পড়েছে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি খাত, বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন। এক সময় এসব নদ-নদী থেকে জীবিকা চলতো প্রায় ১৫ হাজার মানুষের যাদের বেশিরভাগই বেকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
তাদের অনেকেই আবার ঐতিহ্যগত পেশা ছেড়ে বেঁচে থাকার তাগিদে চলে গেছেন অন্য পেশায়।
জেলার দক্ষিণে পদ্মা, পূর্বে যমুনা, উত্তর প্রান্তে বড়াল ও হুরাসাগর নদীতে দেখা দিয়েছে নাব্যতা সঙ্কট। কাগেশ্বরী, সুতিখালী নদী এখন পরিণত হয়েছে খালে, ইছামতি ও আত্রাই নদী এখন আবর্জনার ভাগার , বাদাই ও অন্যান্য নদী পরিণত হয়েছে হাইব্রিড মাছের খামার ও ফসলী জমিতে। এসব নদী শুকিয়ে সেচ কাজ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় যেমন কৃষি পণ্য উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ। এমনকি প্রকৃতিতে বিরাজ করছে মরুর রুক্ষতা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৮০ ' র দশকে জেলার বিভিন্ন নদীতে লঞ্চ, স্টিমার ও নৌকা চলাচল করলেউ এখন সে সকল নদীপথ বেশিরভাগই বন্ধ । এছাড়াও কিছু কিছু নদী হয়ে গেছে নৌকা চলারও অযোগ্য। নাব্যতা ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্পর্কে সুচিন্তিত ব্যবস্থা গ্রহণের অভাব ও সরকারি পর্যায়ে নদীগুলো সম্পর্কে একটা অদ্ভূত উদাসীন মনোভাব পোষণের কারণে আজ বিপর্যস্ত জেলার নৌপথ।
পাবনা জেলার দক্ষিণ পশ্চিম সীমানায় পদ্মা নদীর ৭৫ কিলোমিটার, পূর্ব দিকে যমুনা নদীর ২০ কিলোমিটার, উত্তর দিকে হুরাসাগর নদীর ৮ কিলোমিটার, বড়াল নদীর ২৫ কিলোমিটার এবং গুমানী নদীর সামান্য অংশ নৌযান চলাচলের উপযোগী আছে। উল্লেখ্য এক সময় ইছামতি নদীতে ৫০ কিলোমিটার, চিকনাই নদীতে ৩৮ কিলোমিটার ও আত্রাই ৩০ কিলোমিটার নৌপথ ছিল যেসকল নৌপথ এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
এছাড়া রত্নাই, আত্রাই, সুতিখালী, চিকনাই, চন্দ্রাবতী, কাগেশ্বরী, বাদাই ও ইছামতি নদীতে বর্ষাকালে হয় মাছ চাষ (যার ইজারা দিয়ে থাকে জেলা প্রশাসন)। এসব নদীতে শুষ্ক মৌসুমে হয় ফসল চাষ। সম্পুর্ণরুপে বিলুপ্ত হয়ে গেছে রুকনাই, বারনাই, ট্যাপাগাড়ী, গোহালা, শালিকা, শুটকিদহ ও ভাঙ্গুড়ার ইছামতি নদী
এদিকে নদী গুলোকে চলাচল উপযোগী করে তোলার পাশাপাশি কৃষি খাতের ভবিষ্যৎ বিপর্যয় রোধ ও দেশী মাছ সংরক্ষণের নিমিত্তে নদী রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি গণ।