Advertisement
মোঃ মশিউর রহমান বিপুল,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় কুড়িগ্রাম রাজারহাটের বুড়ির বাজার তিস্তা নদীর চরে তিস্তা আয়োজনে মশাল প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন।
“জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই, তিস্তার ন্যায্য হিস্যা চাই”—এই স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে তিস্তা নদীর তীর। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান সমন্বয়ক ও কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাফার আহ্বানে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মশাল প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাফা বলেন, “তিস্তা শুধু উত্তরাঞ্চলের নয়, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণ। তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ অবিলম্বে শুরু করতে হবে। জনগণ এখন তিস্তার ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাস্তায় নেমেছে।
তিনি আরও বলেন, “তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। যারা এই প্রকল্পের বিরোধিতা করবে, তারা জাতীয় স্বার্থের বিরোধিতা করবে। তিস্তা বিরোধীরা জাতীয় শত্রুতে পরিণত হবে।”
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মোঃ মোস্তাফিজার রহমান মোস্তাফার বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের আগে, অর্থাৎ আগামী তিন মাসের মধ্যেই তিস্তা মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করতে হবে। অন্যথায় কুড়িগ্রাম জেলার মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে উওর অচল করে দেওয়া হবে।”
আন্দোলন সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে তিস্তা নদীর ভাঙন, চর উত্থান ও পানি প্রবাহ হ্রাসের ফলে লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষিজমি বিলীন, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও জীবিকা হারিয়ে মানুষ চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিনের অবহেলায় তিস্তার বুকে জেগে উঠছে অসংখ্য চর; নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রাম, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। ফলে নদীপাড়ের মানুষ দারিদ্র্য ও বাস্তুচ্যুতির শিকার হচ্ছেন।
এর আগে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের পক্ষ থেকে কুড়িগ্রামে গণমিছিল, গণসমাবেশ, পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদানের মতো কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
মশাল প্রজ্জ্বলন কর্মসূচিতে অংশ নেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, ছাত্র ও যুব সমাজের সদস্যরা। তিস্তা নদীর চরে বুড়িরহাট সংলগ্ন এলাকায় আরো উপস্থিত ছিলেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের রাজারহাট উপজেলা সমন্বয়ক আনিচুর রহমান,খলিল মিয়া,নয়ন মিয়াসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ্ব সোহেল হোসেন কায়কোবাদ বলেন,“তিস্তা ইস্যুটি এখন শুধু পরিবেশগত নয়; এটি উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবন-মৃত্যুর প্রশ্ন। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে এই অঞ্চলে খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “সরকার যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে উত্তরাঞ্চলের মানুষ বাধ্য হয়ে রাজধানীমুখী লংমার্চে নামবে।