lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫
Last Updated 2025-07-09T13:05:25Z
ব্রেকিং নিউজ

বাঘায় সরকারি বরাদ্দকৃত প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা

Advertisement


 


বাঘা(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারের কোটি টাকা ভাগ-বাটোয়ারার মাধ্যমে হরিলুট চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।নিয়ম অনুযায়ী বরাদ্দকৃত অর্থ  ও প্রকল্পের তালিকাসহ অন্যান্য সব তথ্য সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট ও নিজ উপজেলায় প্রকাশের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।



সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এসব নির্দেশনা মানছেন না বাঘা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা (পিআইও) মোঃ মাহমুদুল  ইসলাম। সে সঙ্গে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির খবর জেনেও রহস্যজনক কারণে নীরব,প্রকল্পের বাস্তবায়ন কমিটির কর্তারা।



বাঘা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) শাম্মী আক্তার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল ইসলাম এর কাছে এ বিষয়ে তথ্য জানতে চাওয়া হয়।


বাঘা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও)মো. মাহমুদুল ইসলাম বলেন, এসব বিষয়ে প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী কাজ শুরু হওয়ার আগেই বরাদ্দের অর্ধেক টাকা দিয়ে দেওয়া হয় প্রকল্পের বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতির নিকট। বাউসা ইউনিয়নের দিঘা নূরানী মাদ্রাসার সীড়িঘর নির্মাণের জন্য ৪লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।তার ৫০% টাকা পরিশোধ করা হয় প্রকল্পের সভাপতি আব্দুল আজিজ ইউপি সদস্য এর কাছে।পরে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারি ঐ মাদ্রাসায় চলমান কাজ প্রতিষ্ঠানের কমিটির টাকা দিয়ে হচ্ছে এবং প্রকল্পের কোন টাকা প্রতিষ্ঠানি পায়নি।



উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে টিআর প্রকল্পে ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রয়েছে দিঘা নূরানী মাদ্রাসার নামে। প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য ২ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতির কাছে।



উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দিঘা বাজার মসজিদের ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,গায়েবি নাম উল্লেখ করে তৈরি করা হচ্ছে এসব প্রকল্প। আর এসব প্রকল্পের কাগজপত্রে প্রতিষ্ঠানের নাম তালিকাসহ অন্যন্য সব প্রয়োজনীয় তথ্য লিপিবদ্ধ থাকলেও সরেজমিনে তা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর ও অসাধ্য বটে। উপজেলাধীন বাউসা ইউনিয়নের দিঘা নূরানী মাদ্রাসার কমিটি এবং স্থানীয় লোকজন কেহ  জানেন না প্রকল্পের কাগজপত্রে সরকারী বরাদ্দ ৪লক্ষ টাকার বিষয়। কারণ প্রতিষ্ঠানটির কমিটির বদলে এসব প্রকল্পের প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে কাজ করেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ।দিঘা নূরানী মাদ্রাসার প্রকল্পের কাগজপত্রে স্ট্যাম্পে লিখিত কমিটিতে নাম রয়েছে মোঃআঃআজিজ,মোঃআখের আলী মোঃ আকরাম আলী,মোঃ হাবিবুর রহমান,মোসাঃশিরিনা খাতুন। বরাদ্দকৃত ৪০০০০০/ টাকার অনুমূনে মোঃ মাহমুদুল ইসলাম  উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা। 



অভিযোগ উঠেছে,বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের  দিঘা নূরানী মাদ্রাসার নামে সরকারী টিআর এ প্রকল্প বরাদ্দ দিলেও প্রকল্পের সমন্বয়ক ও বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও দূর্নীতির ফলে ব্যাহত হচ্ছে সরকারের উদ্দেশ্য। ফলে কাগজপত্রে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেও বাস্তবে টিআর প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দের প্রায় ৭০ ভাগ অর্থ নয়ছয় করে আত্মসাৎ করছেন সংশ্লিষ্টরা।



এমন অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা, একাধিক ইউপি সদস্য ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার। 



স্থানীয় এক প্রভাষক বলেন,অতীতে এ প্রকল্পে ব্যাপক লুটপাট হওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কর্মকর্তারা ফুলে ফেপে কোটিকোটি টাকার মালিক হচ্ছেন। প্রকল্পের মেম্বার ও পিআইওদের হাতে চলে যাচ্ছে সরকারি বরাদ্দকৃত লক্ষ লক্ষ টাকা।



সম্প্রতি কাবিখা,ভিজিএফ,বিজিএফ,টিআর প্রকল্পের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সকল প্রকল্পের আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমনে অনেকে মৌখিক  অভিযোগ করেছেন উপজেলার প্রশাসকের নিকট।



অভিযোগ উঠেছে,পিআইওদের সঙ্গে এসব প্রকল্পের সমন্বয় করে থাকেন স্থানীয় নেতা ও ইউএনও। ফলে প্রত্যেক উপজেলার সঙ্গে নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে নয়ছয় করা হচ্ছে প্রকল্পের টাকা। এতে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যাহত হলেও লাভবান হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এ কারণেই প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠলেও আজ পর্যন্ত কোনো অনিয়মের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়নি বা কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।  



তবে প্রকল্পের সমন্বয়ক আব্দুল আজিজ বাউসা ইউপি সদস্য বলেন, দিঘা নূরানী মাদ্রাসার সিড়ি ঘর নির্মানের জন্য টিআর প্রকল্পের আমি সভাপতির দায়িত্বে রয়েছি। ৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ইতিমধ্যে ২লক্ষ টাকা দিয়েছে প্রকল্প কর্মকর্তা। প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,মাদ্রাসায় কাজ চলমান মাদ্রাসার টাকায়।প্রকল্পের টাকা সময় হলে দিবেন।



দিঘা নূরানী মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি মোঃ জামাল উদ্দিন ও সদস্যরা বলেন,সরকারি কোনো প্রকল্পের টাকা আমরা পাইনি।প্রতিষ্ঠানের টাকায় কাজ চলছে।তবে ইউএনও স্যার মাদ্রাসায় আসার পরে আমরা জানতে পারি সরকারি ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে ২লক্ষ টাকা কে বা কারা তুলে নিয়েছে।



এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার বলেন, প্রকল্পের এ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আমরা তথ্যটি জানতে পেরে মাদ্রাসাটির সভাপতি ও মসজিদের ঈমাম এবং প্রকল্পের সভাপতি কে আমার অফিসে ডেকে নিয়ে কথা বলেছি।প্রকল্পের বরাদ্দের ২ লক্ষ টাকা ২ দিনের মধ্যে মাদ্রাসার কমিটির ব্যাংক একাউন্টে জমা প্রদান করে জমা রশিদ টি আমাকে দেখানোর জন্য বলেছি।



প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করে উপজেলা বাস্তবায়ন কমিটি। এতে অবগত থাকা ছাড়া আমার সংশ্লিষ্টতা খুব একটা নেই।  


এ সময় তিনি আরও বলেন, কোথাও অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখা হয়। তবে এ ধরনের ঘটনায় অভিযোগে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।