Advertisement
রংপুর (গংগাচড়া) প্রতিনিধিঃ
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের পূর্ব রমাকান্ত এলাকায় পাটক্ষেতে শাক তুলতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন দুই সন্তানের জননী কাওছারা বেগম (৩২)। অভিযুক্তরা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তাকে ব্ল্যাকমেইল ও হুমকি দিতে থাকে। সামাজিক লাঞ্ছনা ও পরিবারিক চাপে শেষ পর্যন্ত আত্মহননের পথ বেছে নেন এই নির্যাতিতা নারী।
স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, গত ৯ জুন দুপুরে শ্বশুরবাড়ির পাশের পাটক্ষেতে শাক তুলতে গেলে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা কয়েকজন যুবক তাকে জোরপূর্বক পাটক্ষেতের ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে পালাক্রমে ধর্ষণের পর মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তাকে হুমকি দেওয়া হয়— "যদি কথা না শোনো, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে।"
এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় কাওছারাকে ভয়ভীতি ও অনৈতিক প্রস্তাব দিতে থাকে অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে ঘটনাটি তিনি তার শ্বশুরকে জানান। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে গত ৭ জুলাই রাতে একটি উঠান বৈঠক বসে। সেখানে কাওছারা কাঁদতে কাঁদতে সবকিছু খুলে বললেও কোনো বিচার মেলেনি। বরং শ্বশুরের কাছ থেকেই অপমানের শিকার হন তিনি। অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, শ্বশুর তাকে বলেন, “এমন কলঙ্ক নিয়ে কেন এখনো বেঁচে আছিস?”
এই মানসিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে পরদিন ৮ জুলাই সকালে নিজ ঘরে বিষাক্ত ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যা করেন কাওছারা। অনেক ডাকাডাকির পর পরিবারের সদস্যরা ঘরে ঢুকে তাকে নিথর অবস্থায় দেখতে পান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর কাওছারার বাবা গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় গণধর্ষণ, ভিডিও ধারণ, হুমকি ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, ঘটনার বিষয়ে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।