lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫
Last Updated 2025-07-09T13:22:58Z
ব্রেকিং নিউজ

আমতলীতে গরুর লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব: ওষুধ সরবরাহ না থাকায় বিপাকে খামারীরা

Advertisement


 

আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা:

আমতলী উপজেলার গরু লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত তিন মাসে অন্তত তিন শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরে এ রোগের পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় বিপাকে খামারী ও কৃষকরা পরেছেন। দ্রুত সরকারীভাবে ওষুধ সরবরাহের দাবী জানিয়েছেন খামারীরা। 


জানাগেছে, এ বছর এপ্রিল মাসের শেষ দিকে আমতলী উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। মশা-মাছি বাহিত এ রোগ দ্রæত উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পরেছে। উপজেলার অন্তত কয়েক হাজার গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গত এপ্রিল মাস থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন মাসে অন্তত তিন শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানাগেছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর গত তিন মাসে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত দুই’শ ৬৫ টি গরুর চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানান উপজেলা প্রানী সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারী সার্জন ডাঃ মোঃ আশিষ বাবু। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরে এ রোগের পর্যাপ্ত ঔষুধ নেই। গরুর মালিকদের বাহির থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। অপর দিকে এ রোগের কোন ভ্যাকসিন নেই। প্রাণী সম্পদ দপ্তরে পর্যাপ্ত ওষুধ ও ভ্যাকসিন না থাকায় গরুর খামারী ও কৃষকরা বিপাকে পরেছেন। গরুর মালিকরা জানান, গরুর শরীরের গোটা গোটা উঠে প্রচন্ড জ্বর হয়। ওই গোটা ফেটে প্রচুর পরিমানে রক্ত-পুজ বের হয়। পরে গরু মারা যায়। কৃষকরা দ্রুত সরকারীভাবে পর্যাপ্ত ওষুধ ও  ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবী জানিয়েছেন। 


বুধবার উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, গত তিন মাসে অন্তত তিন শতাধিক গরু লাম্বি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে জানান কৃষকরা।   


খামারী আলমগীর ঘরামী বলেন, লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত গরু নিয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে এসে ব্যবস্থাপত্র নিয়েছি। কিন্তু  প্রাণী সম্পদ অফিসে এ রোগের কোন ওষুধ দেয়নি। বাহির থেকে ওষুধ কিনতে হয়েছে।  


আমতলী পৌর শহরের কবির গাজী বলেন, একটা ষাড় গরু লাম্বি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে চিকিৎসা করাচ্ছি তেমন উন্নতি হচ্ছে না। 


উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের বজলু মোল্লা ও তার ভাই ফজলু মোল্লা বলেন, লাম্বি স্কিনে ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে দুইটি গরুর বাছুর মারা গেছে।  


একই এলাকার নুর আলম মুসুল্লী বলেন, লাখ টাকা দামের দুইটি গরুর শরীরে গোটা উঠে মারা গেছে। প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরে গিয়ে শুধু ব্যবস্থাপত্র পেয়েছি কোন ওষুধ পাইনি। বাহির থেকে ওষুধ কিনতে হয়েছে।  


হলদিয়া ইউনিয়নের শিবলী শরিফ বলেন, গত ১৫ দিনে উত্তর তক্তবুনিয়া, হলদিয়া ও কালিগঞ্জ এলাকাসহ হলদিয়ায় অন্তত শতাধিক গরু গায়ে গোটা ওঠে মারা গেছে। 


আমতলী উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন,  গরুর চিকিৎসা দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালের বাহিরে অনেক গরু আছে, তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তা আমরা জানিও না।  


আমতলী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আশিষ বাবু বলেন, উপজেলার অনেক গরু লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু মারা যাওয়ার সংখ্যা কম। প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর এ রোগের পর্যাপ্ত ওষুধ নেই। ভ্যাকসিন এখনো উৎপাদন হয়নি। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ২৬৫ গরুর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে এ রোগে আক্রান্ত গরুর মৃত্যুর সংখ্যা আমার জানা নেই।