lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
Last Updated 2025-06-05T11:38:40Z
জাতীয়

বিগত সাড়ে পনেরটা বছর দেশ পুরোপুরি ভারতের কব্জায় ছিল: এম নাসের রহমান

Advertisement


 

ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী মরহুম এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র ও মৌলভীবাজার-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান বলেছেন, ‘সবচেয়ে ভয়ংকর ফ্যাসিস্টকে উৎখাত করা হয়েছে। অনেক বলে এ ফ্যাসিস্টকে উৎখাতে দেশ দ্বিতীয় বার স্বাধীন হয়েছে। হতে পারে, কারণ বিগত সাড়ে পনেরটা বছর দেশ পুরোপুরি ভারতের কব্জায় ছিল। সেটা থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। এই জুলাই অভ্যুত্থানে যে সরকার এসেছে এ সরকার নির্বাচনের অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গে তাদের হাতে আরও দুটি দায়িত্ব এসে পড়েছে। এই যে পনেরশ মানুষ শেখ হাসিনা হত্যা করেছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। কারো চোখ নাই, কারো হাত নাই, কারো পা নাই এই মানুষগুলি একটা বিচার চায়। আর বিগত সাড়ে পনের বছরে হাসিনার দু:শাসনে সরকারের সব প্রতিষ্ঠান সর্বনাশ করে দিয়ে গেছে। একেবারে সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ, সেনাবাহিনী, সুপ্রিম কোর্ট, অধীনস্থ আদালত পর্যন্ত কোথাও বাকি ছিল না। সব নষ্ট করে আওয়ামীপন্থী করে দিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরণের কাজ কেউ করতে না পারে সে জন্য সংস্কারগুলি হাতে নেওয়া হয়েছে এবং এগুলো খুবই ভালো। সাংবিধানিক সংস্কার ছাড়া বাকি যা সংস্কার যতগুলি যেমন পুলিশ, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন, বিচারালয় আর যা-যা করা হয়েছে সব গ্রহণযোগ্য এবং এগুলি চাইলে এক থেকে দুইমাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করে নেয়া যায়।’ তিনি বুধবার (৪ জুন) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ১০ নম্বর হাজীপুর হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন। 

নাসের রহমান আরও বলেন, ‘আজকাল দেশে নির্বাচন নিয়ে বেশি মাতামাতি হচ্ছে। মফস্বল টাউন গ্রামাঞ্চলে যারা থাকেন তারা সবাই নির্বাচন চান। আর শহরের ভিতরে যারার মোবাইল ফোন আছে, এদের একটি অংশ যাদের ফেসবুক আছে ওই ফেসবুক ওয়ালারা দেশে নির্বাচন চান না। ফেসবুক খুললেই দেখবেন তারা নির্বাচন চায় না তারা পাঁচ বছর ড. ইউনুসকে চায় বলে কমেন্ট করে পোস্ট করে। এরা হলো ফেসবুক ভোটার। দেশের মোট ভোটার হলেন সাড়ে ১২ কোটি। আর ফেসবুক ভোটার হচ্ছেন ৫০ লাখ বা আরও কম। এর মধ্যে একটি অংশ সংস্কারের দোহাই দিয়ে নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। তাহলে ১২ কোটির ওপরে যেসব ভোটার রয়েছেন তারাতো কোন কথা বলেননি। তারা কি কেউ ফেসবুকে বলেছেন যে আমি নির্বাচন চাই না।  আসলে নির্বাচন দেশের মানুষ সবাই চায়। কারণ বিগত সাড়ে পনের বছর দেশের মানুষ তাদের ভোট দিতে পারেনি। তারা তাদের পছন্দের সরকার গঠন করতে পারেনি।’

হাজীপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক খোরশেদ আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক বিধান চন্দ্র দে’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সস্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট আবেদ রাজা, আলহাজ্ব আব্দুল মুকিত ও সাবেক সহসভাপতি শওকতুল ইসলাম শকু। উদ্বোধক ছিলেন কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদোয়ান খাঁন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল জলিল জামাল, আহবায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ চৌধুরী, হারুন মিয়া প্রমুখ।

সম্মেলনে এম নাসের রহমান আরও বলেন, ‘অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার বলতে বুঝায় ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ এক বছর। এর বেশি না। এর বেশি হলে এটা অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার নয়। এটাকে অন্য কোনো সরকারের নাম দিতে হবে। নির্বাচন ডিসেম্বর না হওয়ার কোন কারণ নাই। দেশের প্রায় সব দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়।  কিন্তু ড. ইউনুস এ ব্যাপারে চুপ। তিনি শুধু বলেন ডিসেম্বর থেকে জুনে নির্বাচন। জুনের একদিন পরে যাবেন না। কিন্তু তিনি রোডম্যাপ দিতে চাচ্ছেন না। সেজন্য দ্ব›দ্বটা লেগেছে। তিনি শুধু নির্বাচনের মাসটা বলে দিলেইতো সব ঝামেলা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু তিনি তা করছেন না।’ 

তিনি বলেন, ‘বাচ্চাদের একটা দল আছে। ন্যাশনাল চিলড্রেনস পার্টি। জাতীয় শিশু পার্টি। এই শিশু পার্টিদের সবাইর বয়স হল ২৭ থেকে ২৮। তারা যে একেক জন একেক কথা বলে। মনে হয় শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে হার মানাবে। এসব কথাতো ২৭/২৮ বছরের ছেলেদের মুখ থেকে বের হওয়ার কথা না। আমি খুঁজে বের করলাম, এরা হল মাউথ পিস।  এদের পিছনে দুই চারজন তাত্বিক লোক আছেন। তারা আগে শিখিয়ে বলে দেয় কখন কোন কথা বলতে হবে। এরা হল দাবা খেলার গুটি। এই বাচ্চা পার্টিকে দলগঠনে সুবিধা দিতে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা সরকারে ভেতরে থেকে দল বানিয়ে নির্বাচনে সুবিধা নিতে চায়। এদের যতই হৃষ্টপুষ্ট করা হয় তারপরও কোন ভোট তারা পাবে না।’

সম্মেলন শেষে কাউন্সিলে গোপন ব্যালেটে আগামী দুই বছরের জন্য সাবেক ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী সভাপতি, ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান হেলাল সাধারণ সম্পাদক এবং আহরারুজ্জান আকরার সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।