Advertisement
পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ে আনোয়ারা নামের এক প্রতারক নারীর একই সাথে দুই স্বামী অভিনব কায়দায় মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে স্বর্ণ অলংকার সহ লক্ষ লক্ষ টাকা এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওমান প্রবাসী দুলাল মিয়া।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় কুমিল্লা জেলার মানিকপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ ফৈরন খান এর পুত্র দুলাল মিয়া একজন ওমান প্রবাসী দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত ওমানে কাজ করে আসছে।
অভিযুক্ত প্রতারক চক্রের মূল হোতা নারী আনোয়ারা বেগম ও একজন ওমান প্রবাসী। সরজমিন ঘুরে জানা যায় আনোয়ারা বেগম পঞ্চগড় দেবিগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা দামানি গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমানের স্ত্রী।
মিজানুর রহমান ও আনোয়ারা বেগমের ওরশে দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে আনোয়ার ও আশিক। কিন্তু আনোয়ারা বেগম ছিল অত্যন্ত অর্থলোভী নারী সে ওমানের এলিন নামে এক বাংলাদেশী ব্যক্তিকে ভুয়া কাগজপত্রে বিয়ে করে যদিও বাংলাদেশে তার স্বামী মিজানুর রহমান জীবিত রয়েছে।
হঠাৎ একদিন ওমানে দ্বিতীয় স্বামী এলিম হোসেন ও আনোয়ারা বেগম অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয় সেই সময় ওমান পুলিশ তাদেরকে অ্যারেস্ট করে থানায় নিয়ে যায়।
এ সময় ওমান পুলিশ আনোয়ারা বেগমকে জেল হাজতে প্রেরণ করে এবং এলিম হোসেনকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন।
প্রতিবেশী সুবাদে দুলাল মিয়া প্রতারক আনোয়ারা বেগমের পরিচিত ছিল এবং আনোয়ারা দুলাল মিয়াকে জেল থেকে বের করে নিয়ে যেতে অনুরোধ জানায়।
ভুক্তভোগী দুলাল মিয়া অত্যন্ত নরম মনের মানুষ হওয়ায় প্রতারক আনোয়ারাকে জেল থেকে বের করে নিয়ে আসে এবং প্রতারক আনোয়ারার অনুরোধে ওমান ৬৪৬ রিয়াল যা বাংলাদেশে লক্ষ টাকা খরচ করে আকামার সকল কাগজপত্র তৈরি করে দেয় এবং ওমানে থাকার পারমিশন পাইয়ে দেয়।
ধীরে ধীরে দুলাল মিয়া ও আনোয়ারা বেগমের মাঝে সু-সম্পর্ক তৈরি হয় এবং তারা লিভ টুগেদারে থাকতে শুরু করে। আনোয়ারা সুযোগ বুঝে ও প্রতারণার উদ্দেশ্যে দুলাল মিয়ার মোবাইল থেকে বিভিন্ন ডকুমেন্ট নিজের মোবাইলে ট্রান্সফার করে নেয়।দুলাল মিয়া ও আনোয়ারা বেগমের অনৈতিক কার্যকলাপ আপত্তিকর মুহূর্ত আনোয়ারার গোপনে মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।
কিছুদিন পর আনোয়ারা দুলাল মিয়াকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। বলে তোমার ছবি ও ভিডিও তোমার পরিবারসহ সকল সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিব, যদি তুমি আমার প্রস্তাবে রাজি না হও।
দুলাল মিয়া নিরুপায় হয়ে ও মান সম্মানের কথা চিন্তা করে প্রতারক আনোয়ারার প্রস্তাবে রাজি হয় এবং আনোয়ারা কে ২লক্ষ, টাকা তিন ভরি স্বর্ণালংকার যার বাজার মূল্য ৩ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা, দুইটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন যার বাজার মূল্য ৩০ হাজার টাকা দেয়।
কিন্তু এত কিছু হাতিয়ে নেওয়ার পরও প্রতারক আনোয়ারা ক্ষান্ত হননি, আরো টাকা ও স্বর্ণালংকার এর দাবী জানান। আনোয়ারার এই কাজে সহযোগিতা করে তারই আপন দুই ছেলে আনোয়ার ও আশিক। আনোয়ারা প্রতারণার পর অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নেওয়া টাকা তার বড় ছেলে আনোয়ারের ইসলামী ব্যাংক একাউন্টে ও বিকাশের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।
আনোয়ার এই প্রতারক চক্রে জড়িত আছে তার দ্বিতীয় স্বামী এলিম হোসেন, বড় ছেলে আনোয়ার ও আশিক।
বর্তমানে প্রতারক আনোয়ারার দুই স্বামী রয়েছে, একজন মিজানুর রহমান যার বাসা পঞ্চগড় দেবিগঞ্জ উপজেলায় অপরজন এলিম হোসেন ঢাকা মানিকগঞ্জ। দুই স্বামীর বিষয়ে আনোয়ারা বেগম গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী দুলাল মিয়ার ভাতিজা মোঃ মোস্তফা বাইজি বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন যার মামলা নং ৫৩, মামলার ধারা ৪০৬/৪২০ দয়বি।
ভুক্তভোগী দুলাল মিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস রেখে এই প্রতারক চক্রের সকলকেই আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান। এবং ভবিষ্যতেও কেউ যেন এমন প্রতারণা করার সাহস না পায়।
অভিযোগ সূত্রে ও ঘটনার সততা যাচাই করতে গণমাধ্যম কর্মীরা সরজমিনে যায় এবং ২নং শালডাঙ্গা ইউনিয়নের স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ ফরিদুল ইসলাম কে এ বিষয়ে অবগত করেন। চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলাম ঈদুল আযহার পর এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দেন।