Advertisement
হাজী জাহিদ:
নরসিংদীর রায়পুরায় সাংবাদিক সালেক আহমেদ পলাশের জোরপূর্বক জমি দখল নিতে শ্লীলতাহানি ও মারধরের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে আবুল কাশেম নামে একব্যক্তির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার অলিপুরা ইউনিয়নের তুলাতলি গ্রামে।
ভুক্তভোগী সালেক আহমেদ পলাশ দৈনিক মানবকন্ঠ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি ও রায়পুরা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অলিপুরা ইউনিয়নের তুলাতলি গ্রামের বাসিন্দা মৃত সালাউদ্দিন আহমেদ এর ছেলে সালেক আহমেদ পলাশ। পিতা সালাউদ্দিন আহমেদ ১৯৮২ ও ১৯৯৯ সালে ৮৪৯৪ ও ২৩৮৬ নাম্বার পৃথক দলিলের মাধ্যমে আবদুস ছলিম ও মোঃ রূপচাঁন মিয়ার কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে ২ ও পৌঁনে ৩ শতাংশ সহ মোট পৌঁনে ৫ শতাংশ জায়গা রেজিস্ট্রিকৃত সাবকাবলা দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করে পরিবার পরিজন নিয়ে বাসবাস করে আসছেন। সালেক আহমেদ পলাশের বাবা মারা গেলে হঠাৎ করেই ওই সম্পত্তির উপর স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম মেম্বারের কুনজরে পড়ে। শুরু হয় সালেক আহমেদ পলাশের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র। সম্পত্তি দখলে নিতে তৎকালীন ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর আশীর্বাদ পুষ্ট অলিপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং রায়পুরা উপজেলা চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি আলামিন ভূঁইয়া মাসুদ সহ দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে পলাশ ও তার পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। একপর্যায়ে এ নিয়ে আদালত পর্যন্ত গড়ালে আদালত সালেক আহমেদ পলাশের পক্ষে রায় দেন। তারপরও থেমে থাকেনি আবুল কাশেমের সীমাহীন অত্যাচার। তার এহেন কর্মকাণ্ডে সহ্য করতে না পেরে সাংবাদিক সালেক আহমেদ পলাশ গত ০১/০৪/২৫ তারিখে রায়পুরা থানায় একটি জিডি করেন। পরবর্তীতে সালেক আহমেদ পলাশ গত ৩১/০৭/২৪ ইং তারিখে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরে গত ২৫ মে (রবিবার) বিকেলে স্থানীয় এলাকাবাসীর উপস্থিততে সালেক আহমেদ পলাশের নিজ বাড়িতে সালিশী দরবারের আয়োজন করেন। এসময় আবুল কাশেম মেম্বার উপস্থিত না হয়ে তার নিকট আত্মীয় ও স্বজনরা সংঘবদ্ধভাবে দা, ছুরি, চাপাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে সালেক আহমেদ পলাশ, তার স্ত্রীসহ পরিবারের উপর আতর্কিত হামলা চালিয়ে বেড়ধক মারপিট করে গুরুত্বর আহত করেন। ঘটনার পরপরই সালেক আহমেদ পলাশ বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় একটি হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ঘটনার পরদিনই সালেক আহমেদ পলাশের দায়েরকৃত মামলার আসামী আবুল কাশেম মেম্বারের নিকট আত্মীয় ফিরোজ মিয়ার স্ত্রী সীমা বেগমকে দিয়ে সাংবাদিক সালেক আহমেদ পলাশ ও তার স্ত্রী সহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে রায়পুরায় থানায় শ্লীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টা অভিযোগ এনে পাল্টাপাল্টি একটি মামলা দায়ের করেন। পাল্টাপাল্টি এই মামলা দায়ের ফলে পুরো সাংবাদিক সমাজ থেকে শুরু করে এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন উঠেছে প্রকৃত ও সত্য ঘটনাকে আড়াল করতেই কি রায়পুরা পুলিশ প্রশাসনের নিরব ভূমিকা??
স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন, স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ও নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কাশেমের সাথে সাংবাদিক পলাশের বসতবাড়ির জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কাশেম মেম্বার দলের প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক সাংবাদিক পলাশের জায়গা দখল করে রেখেছে। এনিয়ে বেশ কয়েকবার দেন-দরবার হলেও কোনো সুরাহা হয় না।
৭০ বয়সের একবৃদ্ধের সাথে প্রতিনিধির কথা হলে তিনি বলেন, পলাশের বাবা সালাউদ্দিন বেশ কয়েক বছর আগে দুইজনের কাজ থেকে কিনে বসবাস করতেছে। মেইন রোড়ের পাশে হওয়ায় আবুল কাশেম মেম্বারের চোখ পড়ছে ওই জায়গার পর। সে আগে থেকেই ভূমিদস্যু। জায়গা বেচা-বিক্রি করা তার পেশা। সেজন্য সে এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলছে। যারা তার কাছে জায়গা-সম্পত্তি বিক্রি না করে তাদের উপর চলে অত্যাচার। এভাবেই এখন ওই মেম্বার বহু টাকার মালিক হয়েছেন।
সালেক আহমেদ পলাশ বলেন, আমার বাবা ওই জায়গাটা পৃথক দুই দলিলের মাধ্যমে ক্রয় করেন। এরপর থেকেই আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দীর্ঘ বছর যাবত বসবাস করে আসছি। এস.এ, আর. এস রেকর্ড সহ খাজনামূলে মালিকানা সত্ব সঠিক থাকার পরও আবুল কাশেম মেম্বার জায়গা দাবি করে আসছে। ওনাকে এনিয়ে বসার আহ্বান করলেও তিনি বসতে রাজি না। আদালতের ফয়সালা বা সামাজিক শালিসি-দরবার কোনটাই তিনি মানেন না। তিনি শুধু মানেন সম্পত্তিটা আমার। তিনি আরও বলেন, মিথ্যা মামলা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। যা কি-না অতন্ত্য লজ্জা ও কষ্ঠকর। তাদের অনবরত হুমকিতে পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।