Advertisement
সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ গিয়েছিলেন বড় ভাইয়ের শ্বশুরের জানাযায়। বাড়ি ফিরে নিজেও হয়ে গেলেন লাশ। পাশের বাড়ির চাচাতো ভাইয়ের ধারালো ছুরিকাঘাতে নিভে গেল তার প্রাণপ্রদীপ। ছোট বাচ্চাদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে মাদকাসক্ত চাচাতো ভাইয়ের হাতে প্রাণ দিতে হলো জহিরুল ইসলামকে (৩৬)।
জহিরুল ইসলাম পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মধ্য নলপুখুরি গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে। সে পেশায় একজন দিনমজুর ছিল।
গত শনিবার রাতে চাচাতো ভাই জুয়েল (৪২) এর হাতে নির্মম ভাবে খুন হন জহিরুল।
রোববার (১৮ মে) এ ঘটনায় জুয়েলকে আটক করে আটোয়ারী থানা পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। জুয়েল একই এলাকার মৃত খেমার উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার (১৭ মে) বিকালে নিহত জহিরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী চাচাতো ভাইয়ের শ্বশুরের জানাযায় যায়। এই সুযোগে জহিরুলের ৩ বছর বসয়ী শিশু জিসান জুয়েলের ছোট বাচ্চা তুলির সাথে খেলতে যায়। খেলা অবস্থায় দুই শিশুর মধ্যে ঝগড়া হলে জুয়েল জিসানের মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে। পরে রাতে জিসানের বাবা-মা বাসায় ফিরলে তাদেরকে ঘটনা খুলে বলে৷ পরে জহিরুল ওই ঘটনার রেশ ধরে জুয়েলকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে বাঁধে বিপত্তি এবং ঝগড়াঝাটি। সেখানেই পিছন থেকে ধারালো দেশীয় চায়নিজ কুড়াল দিয়ে জহিরুলের মাথায় আঘাত করে জুয়েল। তৎক্ষনাৎ সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রংপুর মেডিকেলে রেফার করে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেলে গত রোববার মারা যায় জহিরুল।
এদিকে গ্রামে জহিরুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রাম থেকে পালাতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে জুয়েল। পরে আটোয়ারী থানা পুলিশকে খবর দিলে, ঘটনাস্থলে গিয়ে জুয়েলকে আটক করা হয়।
সোমবার এবিষয়ে আটোয়ারী থানায় জুয়েলকে প্রধান আসামি করে মোট ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন জহিরুলের স্ত্রী নারগিস বেগম।
এবিষয়ে আটোয়ারী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ ফারুকুল ইসলাম বলেন, গত রোববার জহিরুল ইসলামকে হত্যার দায়ে জুয়েল নামে একজনকে আটক করে থানায় খবর দেয় গ্রামবাসী। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে তাকে আটক করে। সোমবার জহিরুলের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে রংপুর মেডিকেল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।
তিনি আরো জানান, সোমবার এবিষয়ে নিহত জহিরুল ইসলামের স্ত্রী নারগিস বেগম জুয়েলকে প্রধান আসামি করে মোট পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন৷ এর মধ্যে প্রধান আসামি আটক রয়েছে এবং তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে অন্যান্য আসামিদের ধরতে অভিযোগ অব্যাহত থাকবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।