Advertisement
নুর আলম সিদ্দিকী:
দীর্ঘ পরীক্ষার পর প্রকাশিত হলো এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক ডক্টর শহিদুল ইসলাম ফারুকীর লেখা গবেষণাধর্মী বই প্রাচ্যবাদ : ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও জ্ঞানতাত্বিক আগ্রাসন।
বইটি প্রকাশ করেছে : প্রয়াস প্রকাশন।
বই সম্পর্কে ডক্টর ফারুকী বলেন, ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে যুগে যুগে ইসলামবিরোধী শক্তির পক্ষ হতে নানান ষড়যন্ত্র রচিত হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সশস্ত্র যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে মুসলিম উম্মাহকে নির্মূল করার জন্য। কিন্তু প্রতিবারই তারা ব্যর্থ হয়েছে। সম্মুখসমরে পরাজিত হয়ে ইসলামবিরোধী শক্তি যুদ্ধের কৌশল পরিবর্তন করে নতুন যুদ্ধের রূপরেখা প্রণয়ন করে; সেই যুদ্ধের নাম দেয় তারা ‘বুদ্ধিবৃত্তিক ও চিন্তাযুদ্ধ’। ‘প্রাচ্যবাদ’ সে যুদ্ধেরই সবচেয়ে বড় ক্ষেত্র ও হাতিয়ার। ইংরেজিতে যাকে ‘ওরিয়েন্টালিজম’ এবং আরবিতে ‘আল-ইসতিশরাক’ বলা হয়।
প্রাচ্যবাদ আন্দোলনের মাধ্যমে পশ্চিমারা ইসলামের ভাষা-সাহিত্য, সভ্যতা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, জ্ঞানবিজ্ঞান ও ধর্মের মধ্যে সংমিশ্রণ ও বিকৃতি ঘটিয়ে ইসলামের প্রাণশক্তিকে দুর্বল করে দিতে সচেষ্ট হয়েছে।
ক্রুসেড যুদ্ধের পর সূচিত হওয়া এই প্রাচ্যবাদ আন্দোলন মুসলিম দেশগুলোতে চলতে থাকে অত্যন্ত কার্যকরভাবে। যা দাপটের সাথে চলেছে কয়েক শতাব্দীব্যাপী। একুশ শতকে এসে প্রাচ্যবাদ ও বিশ্বায়ন একসাথে চলছে।
প্রাচ্যবাদ আন্দোলনের পেছনে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও সাম্রাজ্যবাদী উদ্দেশ্য ও চিন্তা-চেতনা ক্রিয়াশীল। বর্তমান সমাজে ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ সম্পর্কিত প্রচলিত ভুল ও বিকৃত ধারণাগুলোর অধিকাংশের জন্ম এই প্রাচ্যবাদের গর্ভ থেকে। আজ প্রাচ্যবাদ ও বিশ্বায়নের আড়ালে মুসলমানদের ঈমান-আকিদা ও সভ্যতা-সংস্কৃতি সব লুণ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে। মুসলিম সমাজে নাস্তিকতা ও সংশয়বাদের যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তার পেছনে ক্রিয়াশীল অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে ‘প্রাচ্যবাদ’। অথচ আমরা গভীর ঘুমে বিভোর। মুসলিম উম্মাহকে এই ঘুম থেকে জাগ্রত করাই বইটির উদ্দেশ্য।
বইটিতে যা রয়েছে: অধ্যায়ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত সূচি। প্রতিটি হেডলাইনের অধীনে মোট ১৭৬ টি শিরোনাম রয়েছে।
প্রথম অধ্যায় :-
বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসন :
বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের আভিধানিক অর্থ
বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের পারিভাষিক অর্থ
এখনকার যুদ্ধ বুদ্ধিবৃত্তিক যুদ্ধ
স্বশস্ত্র আগ্রাসন ও বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের মাঝে পার্থক্য
বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের ধরণ
বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের পশ্চিমা চ্যানেল ও উপকরণ
বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
বিশ্ব মানচিত্রে পাশ্চাত্যের উত্থানকাল।
ইউরোপের রেনেসাঁ
উসমানি খেলাফতের পতন
বুদ্ধিবৃত্তিক আগ্রাসনের সূচনা ও ক্রমবিকাশ
দ্বিতীয় অধ্যায়:
প্রাচ্যবাদের পরিচয় ও মর্ম :
প্রাচ্যবাদের আভিধানিক অর্থ
প্রাচ্যবাদ : পরিভাষা বিশ্লেষণ
প্রাচ্যবাদের বিপরীত শব্দ পাশ্চাত্যবাদ
প্রাচ্যবাদের পারিভাষিক অর্থ
প্রাচ্যবিদ কারা?
প্রাচ্যবাদ দুই প্রকার
সাধারণ প্রাচ্যবাদ
বিশেষ প্রাচ্যবাদ
প্রাচ্যবাদের সমার্থক কয়েকটি পরিভাষা আল-ইসতি' রাব (আরববাদ)
আত-তাগরীব (পাশ্চাত্যকরণ আন্দোলন) আত-তানসির (খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিতকরণ আন্দোলন)
প্রাচ্যবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
প্রাচ্যবাদ পাশ্চাত্যের একটি বহুমুখী প্রকল্প
প্রাচ্যবিদদের গবেষণার প্রতিপাদ্য বিষয়.
প্রাচ্যবাদ চর্চার কারণ...
১. প্রাকৃতিক
২. ঐতিহাসিক
৩. ধর্মীয়
৪. সাম্রাজ্যবাদী
৫. রাজনৈতিক,
৬. জ্ঞান-বিজ্ঞান কেন্দ্রিক
৭. ক্রুসেড
৮. বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক
কৌশল পরিবর্তন
তৃতীয় অধ্যায়
প্রাচ্যবাদের ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ
প্রাচ্যবাদ আন্দোলনের পটভূমি
প্রাচীনকাল থেকেই পাশ্চাত্যের সাথে ইসলামের লড়াই
প্রাচ্যবাদের ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ
১ম স্তর: খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে খ্রিষ্টপরবর্তী ষষ্ঠ শতক পর্যন্ত।
২য় স্তর : রাসুলুল্লাহ সা.-এর আবির্ভাব থেকে ঈসায়ী নবম শতক পর্যন্ত
৩য় স্তর : ঈসায়ী নবম শতক থেকে তেরো শতক (স্পেন থেকে ক্রুসেড যুদ্ধসমূহের
সময়কাল) পর্যন্ত.
৪র্থ স্তর : ঈসায়ী তেরো শতক থেকে আঠারো শতক পর্যন্ত
৫ম স্তর : ঈসায়ী আঠারো শতক থেকে একুশ শতক পর্যন্ত
৬ষ্ঠ স্তর : একুশ শতকে প্রাচ্যবাদ
একুশ শতকে প্রাচ্যবাদের নতুন পরিভাষা ও রোডম্যাপ 'বিশ্বায়ন',
বিশ্বায়ন : মুসলিম বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদের নতুন থাবা
প্রাচ্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ
প্রাচ্যবাদ ও ইহুদিবাদ
প্রাচ্যবাদ ও খ্রিষ্টান মিশনারি
প্রাচ্যবাদ ও হিউম্যানিজম
প্রাচ্যবান ও সেক্যুলারিজম,
প্রাচ্যবাদ ও লিবারেলিজম
প্রাচ্যবাদ ও মডারেটিজম
প্রাচ্যবাদ ও বিশ্ববিস্তৃত পশ্চিমা মিডিয়া নেটওয়ার্ক,
চতুর্থ অধ্যায় :-
প্রাচ্যবাদের ক্ষেত্র ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য..
প্রাচ্যবাদের ধর্মীয় লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
১. আল-কুরআনের ব্যাপারে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করা
২. হাদিসে নববির ব্যাপারে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করা.
৩. মহানবির সিরাত ও রিসালাত সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানো
৪. রাসুলের সাহাবি ও স্ত্রীগণ সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানো..
৫. ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানো
৬. ইসলামের আইনশাস্ত্র ফিকহ সম্পর্কে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি করা
৭. তাসাওউফ সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানো
৮. আরবি ভাষার দীনি বৈশিষ্ট্য ও রঙ নির্মূল করা
৯. ইসলামি শরিয়ার বিভিন্ন বিধি-বিধানের মূল কাঠামো বিকৃত করা
১০. পশ্চিমাদের থেকে ইসলামের সত্যকে আড়াল করা
১১. দীনি প্রতিষ্ঠান ও তার ধারক-বাহকদের চরিত্র হনন করা.
১২. ইসলামের উত্থানকে প্রতিরোধ করা
১৩. মুসলমানদেরকে খৃস্টধর্মে দীক্ষিত করা
প্রাচ্যবাদের সাম্রাজ্যবাদী লক্ষ্য-উদ্দেশ্য.
১. ইসলামি ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্বচ্ছতা বিনষ্ট করা,
২. ইসলামি আকিদা-বিশ্বাসের স্থলে ধর্মহীন চিন্তা-দর্শন চাপিয়ে দেওয়া
৩. ইসলামি সভ্যতা-সংস্কৃতির স্থলে পশ্চিমা সভ্যতা-সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া
৪. মুসলমানদের মাঝে চিন্তাগত বিরোধ ও বিভক্তি সৃষ্টি করা
৫. মুসলিমদের পবিত্র স্থানগুলোকে পশ্চিমাদের প্রভাবাধীনে নিয়ে আসা,
৬. মুসলিম উম্মাহর হৃদয় হতে দীনি চেতনা ও মর্যাদাবোধ নির্মূল করা
৭. ইসলাম প্রতিরোধ আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করা