Advertisement
মিঠুন পাল, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর গলাচিপায় এক হিন্দু নারীর পৈতৃক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল ও ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার মোশারেফ হোসেন গাজীর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ধর্ণা রানী বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি গলাচিপা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (৬ জুলাই) উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের হরিদেবপুর এলাকায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হরিদেবপুর এলাকার ওমেশ চন্দ্র হাওলাদার ছিলেন পাঁচ ভাইয়ের একজন। তাদের কিসমত হরিদেবপুর মৌজায় ১৫৪ নম্বর এসএ খতিয়ানে পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। ওমেশ চন্দ্র তার নিজ অংশের পাশাপাশি এক ভাইয়ের অংশ ক্রয় করে নিজ নামে ভোগদখলে নেন। মৃত্যুর আগে তিনি তার মেয়ে ঝর্ণা রানী ও স্ত্রীর নামে দলিল করে দিয়ে যান। অন্যদিকে, ওমেশ চন্দ্রের অপর তিন ভাই তাদের অংশ মোশারেফ হোসেনের কাছে বিক্রি করেন। এই সূত্রে ৫২২ নম্বর দাগের ২০ শতাংশ জমির ভোগদখল নিয়ে ঝর্ণা রানী ও মোশারেফ হোসেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
বিরোধ মীমাংসায় গলাচিপা থানায় লিখিত অভিযোগ ও সালিসি বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হলেও, গত ৫ জুলাই মোশারেফ হোসেন সালিসিতে না বসে বিরোধীয় জমি দখলের চেষ্টা করেন এবং ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। খবর পেয়ে ঝর্ণা রানী পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং পুলিশ কাজ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ৬ জুলাই গভীর রাতে ঝর্ণা রানীর অনুপস্থিতিতে মোশারেফ লোকজন নিয়ে জমি দখল করে সেখানে ঘর নির্মাণ শুরু করেন।
ঝর্ণা রানী তার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, অভিযুক্ত মোশারেফ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে তাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ঘটনার দিন পরিকল্পিতভাবে লোকজন নিয়ে এসে কাঠ ও নির্মাণসামগ্রী এনে জোরপূর্বক ঘর নির্মাণ শুরু করেন। বাধা দিলে তাকে এবং তার স্বজনদের হুমকি দেওয়া হয়। পরে রাতের আঁধারে ঘর নির্মাণ করে জমি দখল করা হয়। এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গলাচিপা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ঝর্ণা রানী। এছাড়াও আইনি প্রক্রিয়ায় জমি ফিরে পেতে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন তিনি।
ঝর্ণা রানী বলেন, এটি আমার পৈতৃক সম্পত্তি। আমরা বৈধ মালিক। মোশারেফ ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে বারবার হুমকি দিয়ে এখন জোরপূর্বক ঘর তুলে নিয়েছে। আমি ন্যায়বিচারের আশায় আইনের শরণাপন্ন হয়েছি। আমি গরিব মানুষ তারা প্রভাবশালী তাই ক্ষমতাবলে আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে জোরজবরদস্তি করছে। নিজের সম্পত্তি থাকতেও আজ অন্যের জমিতে থাকতে হচ্ছে আমাদের। আমি বিচার চাই।
অভিযুক্ত মোশারেফ হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশাদুর রহমান জানান, অভিযোগটি পেয়েছি, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।