Advertisement
সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে এক স্কুলছাত্রীকে (১৬) দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণের দায়ের করা মামলায় কথিত প্রেমিকসহ ছয়জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন পঞ্চগড় আদালত।
গত বুধবার (২৮ মে) দুপুরে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ মাসুদ পারভেজ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি জাকির হোসেন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
যাবজ্জীবন দন্ড পাওয়া আসামিরা হলেন, আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের পুরাতন আটোয়ারী এলাকার সাইফুল ইসলাম (৪৯), আমিনুল ইসলাম ওরফে ডিপজল (২৪), মালগোবা গ্রামের হাসান আলী (২২), নজরুল ইসলাম (৪৫), অমর চন্দ্র বর্মণ (৩৫), এবং ফতেপুর গ্রামের সবুজ আলী (২৭)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরী পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা। সে স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। আটোয়ারী উপজেলার মালগোবা গ্রামের হাসান আলীর সাথে মোবাইলের মাধ্যমে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের সূত্র ধরে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে ২০২২ সালের ৬ আগস্ট বিকেলে হাসান মেয়েটিকে পঞ্চগড় শহরে ডেকে নিয়ে আসে।
পরে হাসান ও তাঁর এক বন্ধু মেয়েটিকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরাঘুরি করে। সন্ধ্যার পর তারা মেয়েটিকে উপজেলার ধামোরের পুরাতন আটোয়ারী-বন্দরপাড়া এলাকায় নির্জন বাগানে নিয়ে যান। ওই বাগানে রাত আটটার দিকে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন প্রেমিক হাসান আলী ও তাঁর সহযোগী বন্ধু।
সেখানে স্থানীয়দের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান হাসান ও তার বন্ধু। পরে মেয়েটিকে সাহায্য না করে উল্টো স্থানীয় সাইফুল, আমিনুল, অমর চন্দ্র , নজরুল ও সবুজ মেয়েটিকে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করেন। পরে ধর্ষণকারীদের মধ্যে একজন মেয়েটিকে সেখান থেকে পাশের রাস্তায় রেখে পালিয়ে যান।
ওই রাতে স্থানীয় এক ব্যক্তি মেয়েটিকে উদ্ধার করে পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে মেয়েটির কাছ থেকে তাঁর স্বজনদের ফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করলে স্বজনেরা গভীর রাতে মেয়েটিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরের দিন ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আটোয়ারী থানায় দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে সাতজনের নামে উল্লেখ্য একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামি কিশোর হওয়ায় তার বিষয়ে শিশু আদালতে আগামী ১৭ জুন রায় ঘোষণা হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবীব বলেন, ছয়জন আসামির মধ্যে একেক আসামির পক্ষে ভিন্ন ভিন্ন আইনজীবী ছিলেন। আদালতের এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।