lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪
Last Updated 2024-05-28T13:12:11Z
অনিয়ম - দুর্নীতি

বেনাপোল কাস্টমসে ফুলমিয়া নাজমুল সিন্ডিকেটের ডিএম ফাইলে অবাধ ঘুষ বাণিজ্য - BD Prokash

Advertisement


বেনাপোল প্রতিনিধিঃ


বেনাপোল কাস্টমসে একটা প্রবাদ চালু হয়েছে ডি এম শাখায় কর্মরত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ফুল মিয়াকে তার বেঁধে দেওয়া রেট ফাইল প্রতি ১৫০০ টাকা না দিলে ডি এমের মাল ছাড় করিয়ে নিতে পারেনা কেউ। আর তার এই ঘুষের টাকা আদায়ে সহায়তার জন্য রয়েছেন সিপাই নাজমুল, যে কিনা তার বসের সব ইশারা বোঝে।



বেনাপোল ইমিগ্রেশন কাস্টমসে ডিএম কৃত পণ্য ভ্যাট দিয়ে বেনাপোল কাস্টমস থেকে ছাড় করাতে হলে আপনাকে অনেক কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। তার ভিতরে সবচেয়ে বেশি যে ধাপটিতে আপনাকে ভোগান্তি পোহাতে হবে তার নাম ফুলমিয়া-নাজমুল সিন্ডিকেট। ডিএম পণ্য ছাড় করানোর বিষয়ে পুরাতন যারা কাজ করেন তাদের সকলের সিন্ডিকেটের কার্যক্রম মুখস্ত। কিন্তু নতুন কোন ব্যাক্তি কিংবা ডিএম পণ্যের প্রকৃত মালিক মাল ছাড় করতে গেলে পরেন বিপাকে।



ডিএম শাখার ফুলমিয়া-নাজমুল সিন্ডিকেট সম্পর্কে একাধিক অভিযোগ পাওয়ার পর এই সিন্ডিকেট সম্পর্কে জানার জন্য এই ভুক্তভোগীর সাথে সরাসরি হাজির হয় ফুলমিয়ার দপ্তরে। নানা টালবাহানায় এই সিন্ডিকেট দিনের পরদিন তাকে ঘুরাতে থাকে কিন্তু অবলীলায় কিছু ব্যাক্তির কাজ সহজে ছাড় হয়ে যাচ্ছে। এই জাদুর রহস্য হিসাবে জানা যায় ফাইল প্রতি ১৫০০ টাকা দিলে ডিম ফাইলের সকল মুসকিল আঁচান হয়ে যায়, জি আর নাম্বার পেতে তখন আর কোন বেগ পেতে হয়না। আর যদি আপনি টাকা না দিয়েও সব কাজ শেষ করে মাল নিতে চলে আসেন তখন মাল নিতে গেলে শুরু হয় নানা টালবাহানা ভ্যাট কম দিছেন, কাগজ সব ঠিক নেই, মাল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সহ নানা অসুবিধা। 



ফুলমিয়ার রুমে অবস্থান কালে এক সিএন্ডএফ কর্মী তার একটি ডিএম পণ্য ছাড়িয়ে নিতে আসলে তার ফাইল অনেক ঘাটাঘাটি করে নিঃসংকোচে সেই ব্যাক্তিকে বলেন এটা ছাড়াতে গেলে এখানে ১৫০০ টাকা জমা দিতে হবে। এটা কোন সরকারি রেট কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এখানের নিয়ম এটা, এই মাল ছাড়াতে গেলে এটা আপনাকে দিতেই হবে। তারপর অনেক জোরাজুরির পর মাল কম থাকায় দেনাপাওনা ১০০০ টাকায় গিয়ে মিট হয়। এই ঘুষের টাকা সিপাহি নাজমুল গ্রহণ করার সময় আলামত হিসাবে সেটি ভিডিও রেকর্ড করা হয়। 



পরবর্তীতে সেই মাল গুদাম থেকে বের করে দিতে হলে কর্মরত লেবারদের দিতে হবে বকশিস। না হলে তারা মাল খুঁজে দেবেনা। মাল বের করে দেবার পর ২জনকে ২০০ টাকা বকশিস দিতে গেলে তারা সে টাকা নেবে না, তাদের নাকি রেট বাঁধা ৫০০ টাকা। তাদের কাছে প্রশ্ন করা হয় এই মালটি পাশেই ছিলো খুজতে কষ্ট হয়নি তাছাড়া তোমারা কাস্টমস থেকে কাজের জন্য টাকা পাও তাহলে কেনো বকশিস এত বেশি। তখন তারা (রেকর্ড কৃত) বক্তব্যে বলেন আমাদের কাস্টমস থেকে একটি টাকাও দেয়না, আমরা অফিসারদের সামনেই বলছি, আমরা কাজ করে টাকা নেই। কোন ফাও টাকা নেই না এজন্য ৫০০ টাকা দিতেই হবে। সেখান থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে মাল নিয়ে বের হতে গেলে কাস্টমসের সিপাহিকে মাল ছাড়ানোর কাগজ দেখাতে হয় এবং গেট থেকে মাল বের করতে গেলে দিতে হয় বকশিস। এছাড়াও এই ডিএম ফাইল তৈরি করতে গেলে আরো যে কয়েকটি ধাপ আছে সেখানেও চলে ঘুষ বাণিজ্য যেটা পরিবর্তেতে প্রকাশ করা হবে।



ডিএমের মাল ছাড়াতে এসে রাসেল নামের এক ভুক্তভোগী পাসপোর্ট যাত্রী বলেন, আমার কিছু বেবি আইটেমের মাল ডিএম হয়েছে। কিন্তু আমি মালের জি আর নাম্বার নেওয়ার জন্য আজ ১ মাসের সময় ধরে এই ফুলমিয়া আর নাজমুলের পিছনে ঘুরছি। সকাল ১১ টাই আসলে শুনি ফুলমিয়া আসেনি দুপুরে এসে তার নিজের কাজ করতে করতে চলে যান লাঞ্চে বিকালে আসতে আসতে অফিস শেষ। সর্বশেষ তিনি বলেন কত ঘোরাতে পারে দেখি এই অফিসার, আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো এবং মাল আমি ছাড়াবোই।



এবিষয়ে সিপাহি নাজমুল ইসলাম বলেন, কি বলেন এসব আমাদের এখানে এমন কিছু হয়না। ভিডিও রেকর্ডের কথা বললে তিনি সাথে সাথে তিনি ফোনটা কেটে দেন। 



ঘুষ বাণিজ্য সম্পর্কে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ফুলমিয়াকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে তার অফিসে দেখা করতে বলেন।