Advertisement
ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার:
পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ও এর পরদিন (৭ ও ৮ জুন) দুই দিনে মৌলভীবাজার জেলার তিন উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় আপন দুই ভাইসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। রবিবার (৮ জুন) বেলা আড়াইটার দিকে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ঢাকা-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের ২ নম্বর ভুনবীর ইউনিয়নের সাতগাঁও চৌমুুহনা এলাকায় স¤্রাট পেট্রোল পাম্পের সামনে একটি মোটরসাইকেল ও ব্যাটারি চালিত একটি ভ্যানগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী অজ্ঞাত যুবক রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. কিশোর পোদ্দার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় পতিত ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।’
শ্রীমঙ্গল হাইওয়ে থানার পরিদর্শক সুমন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির নাম-পরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
এর আগে পবিত্র ঈদের দিন (৭ জুন) রাত ১১টার দিকে মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও ১ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সদর উপজেলার কমলগঞ্জ-শমসেরনগর সড়কের চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের শ্যামরকোনা এলাকায় দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে দুই মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্যমরকোনা গ্রামের আনকার মিয়ার ছেলে জুবের মিয়া (২২) এবং কমলগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের হারিছ মিয়ার ছেলে কামরুল মিয়াকে (১৮) মৃত ঘোষণা করেন। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত মাহবুব মিয়াকে (২০) আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আহমেদ ফয়সাল জামান বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।’
একই দিনে (শনিবার ৭ জুন) বিকেলে জেলার বড়লেখা উপজেলায় বড়লেখা-কুলাউড়া সড়কে একটি প্রাইভেট কারের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী আপন দুই ভাই নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন বড়লেখা পৌর এলাকার মহুবন্দ গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে সাহেদ হোসেন সুমন (২৬) ও রুমন আহমদ (২৪)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৭ জুন) বিকালে কোরবানির গরুর মাংস পৌছে দিতে এবং ঈদের কুশল বিনিময়ে ছোট ভাই রুমনকে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে উপজেলার দক্ষিণভাগে অবস্থিত শ্বশুরবাড়ির দিকে রওয়ানা হন সাহেদ। পথিমধ্যে বড়লেখা-কুলাউড়া সড়কের কাঠালতলী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে এসে পৌছলে তাদের মোটরসাইকেলের সাথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রæতগামী প্রাইভেট কারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাহেদ হোসেন সুমন মারা যান এবং তার ছোট ভাই রুমন আহমদ গুরুতর আহত হন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে সিলেট এমএজি ওসামনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রুমন।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম সরকার বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরপরই প্রাইভেট কারটির চালক পালিয়ে গেছেন। তবে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।’