lisensi

Advertisement

Picsart-23-09-20-19-46-51-668
বাংলাদেশ প্রকাশ
রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫
Last Updated 2025-06-15T13:31:08Z
ব্রেকিং নিউজ

দুই সন্তানকে নিয়ে বাঁচতে চায় ক্যান্সারে আক্রান্ত উসমান

Advertisement


 


সালাম মুর্শেদী, (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ ছোট্ট দুই সন্তানকে নিয়ে বাঁচতে চায় মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত উসমান গনী (৩০)। টিউমার অপারেশনের প্রায় ৩২ টি সেলাইয়ের দাগ নিয়ে এখনো অনেক কষ্ট করে বেঁচে আছে সে। প্রতিদিন মৃত্যু যেন তাকে বহুবার হানা দেয়। কিন্তু বাঁচার আশায় এখনো অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করে বেঁচে আছে সে। অবুঝ দুটি সন্তানের মুখের দিকে তাকালেই আবারো সুস্থ হয়ে তাদেরকে কোলেপিঠে করে বাঁচার স্বপ্ন দেখে উসমান। কিন্তু মরণব্যাধি ক্যান্সার তার সেই আশায় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন কেবলই স্বপ্নই থেকে যাবার পথে। 



উসমান হোটেল শ্রমিকের কাজ করে চলতো তার সংসার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিটি দীর্ঘ দেড় বছর ধরে দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় পথে বসতে বসেছে ওই পরিবারটিকে। 



দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত উসমান গনী পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়ন কাটালি গ্রামের ইব্রাহিমের ২য় ছেলে। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে সে ২য়। তার বাবা একজন দিনমজুর। উসমান গনী দীর্ঘ দিন ধরে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে রংপুর শহরে থাকতেন৷ এবং রংপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের এক হোটেলের কার্মচারী ছিলেন৷ হোটেলের কাজ করে গ্রামে মা-বাবাকেও টাকা পাঠাতেন তিনি। সবকিছুই বেশ ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তার শরীরে বাসা বাঁধে মরণব্যাধি ক্যান্সার।



এদিকে সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় পরিবারটিতে নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়। দিনমজুর বাবার পক্ষেও তার চিকিৎসার টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছেনা। এর মধ্যে তার চিকিৎসার জন্য জমিজমা বিক্রি করে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে পরিবারটি। চিকিৎসার পিছনে খরচ করেছেন প্রায় ৭ লক্ষ টাকা। প্রতিদিন তার ঔষধ বাবদ ২ হাজার টাকা জোগাড় করা তো দূরের কথা দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড় করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। 



ব্যাথার যন্ত্রণায় বিছানায় কোনো সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন উসমান। সুয়ে থাকা ছাড়া হাঁটা-চলা এমনকি চেয়ার বা টুলেও বসে থাকতে পারেনা সে। অর্থাভাবে ঔষধপত্র ঠিকঠাক কিনতেও পারছেনা তার পরিবার। 



গত বছরের জানুয়ারির দিকে তার মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পরে। সেই থেকে তার অসহায় পরিবারে নেমে আসে কালো মেঘের ছায়া। 


উসমান গনীর স্ত্রী রিতা বেগম জানায়, গত বছরের জানুয়ারির দিকে পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় উসমান। পরে রংপুরের পপুলার-২ নামে বেসরকারি একটি ক্লিনিকে দেখানো হয়৷ সেখানে এন্ডোসকপি, সিবিসি, আরবিএস করানোর পরে টিউমার ধরা। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরের ডা. সমির কুমার তালুকদারের কাছে সিটি স্কিন করানোর পর সেখানে তার কিডনির উপরে টিউমার ধরা পরে। তারপর রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয় কিডনির উপরে টিউমার অপারেশন করার জন্য। দীর্ঘ তিন মাস ভর্তি থাকার পরে তার অপারেশন করা হয়। অপারেশন শেষে কিছুদিন পর আবার বায়োপসি করে তার ক্যান্সার ধরা পরে। 


এরমধ্যে তাকে ৬ বায় ক্যামো থেরাপি দেওয়ার পরেও স্বাভাবিক হয়নি৷ পরে চিকিৎসকরা তাকে রেডিও থেরাপি দেওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু আমাদের মতো এমন অসহায় পরিবারের পক্ষে রেডিও থেরাপি দেওয়ার মতো কোনো সহায় সম্বল নেই। যার ফলে আমার স্বামী দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়েছে। তাই উসমান গনীকে মরণব্যাধি ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচাতে এবং তার ছোট্ট দুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সমাজ ও দেশের বৃত্তবানদের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন তার স্ত্রী। 



এনিয়ে তোড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহ বলেন, উসমান গনী ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। আমরা আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সাহায্য করব। তার সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর আমরা রাখছি। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজ ও দেশের বৃত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করেছেন তিনি।