Advertisement
নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুর উপজেলার দিয়ার বাহাদুর মৌজায় বৈধভাবে ইজারা নেওয়া বালুঘাটকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি,নৌপথে সন্ত্রাস,নির্যাতন ও পুলিশের প্রত্যক্ষ মদদের অভিযোগ উঠেছে ঈশ্বরদীর বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু ও তার ভাই মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে।অভিযোগ রয়েছে, এই দু’জনের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না — কারণ তাদের পেছনে আছে প্রভাবশালী প্রশাসনিক ‘ছায়া’।
প্রতিদিন ৫ লাখ টাকার চাঁদাবাজি:
এ বছরের শুরুতে মোল্লা মোল্লা ট্রেডার্স নামক প্রতিষ্ঠান প্রায় ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়ে বৈধভাবে বালি মহাল ইজারা নেয়। কিন্তু এরপর থেকেই ইজারাদারদের উপর চাঁদার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। প্রতিদিন ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে পিন্টু-মেহেদী চক্র। ইজারাদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুরু হয় ষড়যন্ত্র — সাজানো অস্ত্র উদ্ধারের নাটক,নিরীহ নৌকার মাঝিদের মারধর, এবং পুলিশের সাহায্যে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো।
ঈশ্বরদীর থানার নতুন ওসি হবার পূর্বে দীর্ঘদিন পাবনা জেলা গোয়েন্দা (ডিএস বি) শাখায় ঈশ্বরদীতে কর্মরত ছিলেন।তার বাড়ি বগুড়ায় হবার সুবাদে,ঈশ্বরদীকে তার নিজের বাড়ি মনে করেন। স্থানীয় ও ননাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্রে জানা যায়,ঈশ্বরদীর অপরাধ চক্র তার মুখস্থ ছিল বলেই দায়িত্ব পেয়েই তিনি মেহেদী হাসানদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেন এবং‘অস্ত্র উদ্ধার নাটক’সাজানোর মত একটি জঘন্য নোংরা কাজে লিপ্ত হয় মেহেদির লোক জননিয়ে
নিরস্ত্র দিনমজুরদের ধরে অস্ত্র হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং পরে তা‘অস্ত্র উদ্ধার’ বলে চালানো হয়। জনসাধারণের মতে,এই ধরনের ঘটনা পুলিশের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পুলিশের দলীয় ভূমিকার অভিযোগ আবারো ঘুরে ফিরে আসছে।একাধিক জন জানিয়েছেন।
কোটি টাকার অবৈধ বালি বিক্রি:
ঈশ্বরদীতে নৌ পুলিশের দায়িত্ব পাওয়ার পর, ভেড়ামারা ফেরিঘাটে তার আত্মীয় বিজলীকে ব্যবহার করে ব্রিজের নিচ থেকে কোটি কোটি টাকার ভরাট বালি অবৈধভাবে বিক্রি করে। অথচ এসব কর্মকাণ্ড দিনের আলোয় হলেও প্রশাসন নিরব।
ব্যবসায়ী ও সাধারণ শ্রমিকরা চরম বিপাকে:
৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার সরকারি ইজারা নেওয়া ব্যবসায়ী এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নদীপথে বৈধ বালু পরিবহন করতে গেলেও বাধা দেওয়া হয়। সাধারণ মাঝি,লেবার ও নৌকার মালিকরাও এই চাঁদাবাজ চক্রের হাতে জিম্মি। প্রতিটি নৌকা থেকে 'নৌ পুলিষ পাহারাদারি ফি' নামে আদায় করা হচ্ছে ১ হাজার টাকা করে।
দাবি উঠেছে স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্তের:
জনসাধারণ ও সংশ্লিষ্ট সৎ ব্যবসায়ী মহল দাবি জানিয়েছেন,এই জঘন্য চাঁদাবাজি,অবৈধ সম্পদের পাহাড়,পুলিশি সহায়তায় নিরীহ মানুষকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা,এবং প্রশাসনের নিরবতার বিরুদ্ধে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া দরকার।তা না হলে শুধু একটি বালুঘাট নয়, সারা দেশের সরকারি রাজস্ব, জননিরাপত্তা এবং পুলিশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এরকম ভবিষ্যতে চলতে থাকলে লালপুরের মত বৈধ বালু মহাল কেও নিবে না।